এটিএম (ATM) থেকে তুলতে গেল ১০০ টাকা, তবে বেরিয়ে আসলে ৫০০ টাকা। কি অবাক হচ্ছেন? আসলে এটাই সত্যি। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লির হর্ষ বিহার এলাকায় গত ২৯ এপ্রিল। সবথেকে বড় ব্যাপার, একবার নয়, একাধিকবার ঘটেছে এই ঘটনা। ফলে এটিএম বুথের সামনে হৈচৈ লেগে গিয়েছে। আর এই ঘটনাটি নজরে আসায় পুলিশি তদন্ত শুরু হয়। এমনকি প্রকাশ্যে আসে কোটি টাকার জালিয়াতির ঘটনা।
কীভাবে ফাঁস হলো এই ঘটনাটি?
আসলে ১ মে একটি ক্যাশ লোডিং কোম্পানির কর্মীরা এটিএমে নগদ টাকা ভরতে এসে দেখেন যে, হিসাবে গরমিল হচ্ছে। মেশিনে থাকা টাকার পরিমান এবং ট্রানজেকশনের হিসাব মিলছে না। আর তৎক্ষণাৎ কোম্পানির শাখা ম্যানেজার বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছিল। তখনই শুরু হয় গভীর তদন্ত।
কীভাবে জালিয়াতি করা হত?
পুলিশ এবং কোম্পানির প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে চমক দেওয়া তথ্য। জানা যাচ্ছে যে, এটিএমে টাকা লোড করতে গিয়ে ১০০ টাকার ট্রেতে ৫০০ টাকার নোট এবং ৫০০ টাকার ট্রেতে ১০০ টাকার নোট রাখা হয়।
শুধু তাই নয়, ৫০০ টাকার ট্রেটি ইচ্ছাকৃতভাবে সামান্য বাইরে টেনে রাখা হয়েছিল, যাতে সেই ট্রেতে রাখা নোট আটকে যায় এবং আর বাইরে না আসে। ফলে গ্রাহক যখন ১০০ টাকা তুলতে যাবে, তখন যেন ৫০০ টাকার নোট বেরিয়ে আসে।
এমনকি পুলিশের তদন্তে জানা যায় যে, ওই কোম্পানির দুই কর্মী এই কারসাজির সঙ্গে যুক্ত। তারা নিজেদের ১১২ জন পরিচিতকে পাঠিয়েছিল এটিএম বুথে টাকা তুলতে। হ্যাঁ, তারাই পরিকল্পনামাফিক টাকা তুলে নেয়। এতে কোম্পানির প্রায় ৮ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। জানা যাচ্ছে, সেদিন এটিএমে ৩১ লক্ষ টাকা লোড করা হয়েছিল।
সিসিটিভি ফুটেজের ভূমিকা
পুলিশ এখন এটিএম বুথে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে, যাতে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, কারা টাকা লোড করেছিল এবং কারা অতিরিক্ত টাকা তুলেছে। ইতিমধ্যে দুই অভিযুক্ত কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। আর একজন কর্মী দাবি করছে যে, তিনি অসুস্থ থাকায় ভুলবশত এই অদলবদল হয়ে গিয়েছিল। তবে তদন্তকারীরা এই ঘটনাকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলেই মনে করছে।
আরও পড়ুন: গ্রাহকদের বিরাট ঝটকা দিল জিও! নতুন প্ল্যান থেকে সরিয়ে নিল ডেটার সুবিধা
জালিয়াতি থেকে সুরক্ষিত থাকুন
তবে এই ঘটনার পর সাধারণ গ্রাহকদের সতর্ক থাকাই জরুরি। লেনদেনের সময় অবশ্যই রশিদ সঙ্গে রাখুন, আর লেনদেন করার পর নোট গুনে নিন এবং সিসিটিভি ক্যামেরার সামনেই থাকুন। এমনকি কোনও অসংগতি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এটিএমের ব্রাঞ্চে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করুন।