লোকসভা নির্বাচনে ঠিক আগে বিরাট চাল কেন্দ্রীয় সরকারের। প্রতিশ্রুতি মত দেশে লাগু হয়ে গেল CAA. সোমবার বিকেলে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট কার্যকর করা নিয়ে গেজেট নোটিফিকেশন জারি করে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০১৯ সালে সংসদে CAA আইন পাস হলে এবং রাষ্ট্রপতি সই করে দেওয়া সত্ত্বেও এতদিন গেজেট নোটিফিকেশন জারি হয়নি বলে এটি কার্যকর হয়নি।
যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মাসখানেক আগে থেকেই বলে আসছিলেন, লোকসভা ভোটের আগেই CAA কার্যকর করা হবে। সূত্রের খবর সোমবার রাতের মধ্যেই দেশজুড়ে কার্যকর হয়ে যেতে পারে CAA. ফলে এদিন রাত থেকেই ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন এ দেশে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের একাংশ!
CAA কী? (What is CAA in Bengali)
২০১৯ সালে সংসদে পাস হওয়া সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্টে বলা হয়েছে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে নিপীড়নের শিকার হয়ে যে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ভারতে আশ্রয় নেবেন, তাঁদের কোনরকম নথিপত্র ছাড়াই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।
নিপীড়িত ধর্মীয় সংখ্যালঘু বলতে কাদের বলা হচ্ছে সেটাও CAA-তে নির্দিষ্ট করা আছে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন, শিখ ও পার্সি-রা যদি ধর্মীয় নিপীড়ন বা অন্য কোনও অত্যাচারের কারণে নিজেদের বাঁচাতে ভারতে এসে আশ্রয় নেন। তবে তাদের CAA আইনে আবেদন করলেই নাগরিকত্ব দিয়ে দেওয়া হবে। তবে এই আশ্রয় নেওয়ার সময়টা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হতে হবে।
সাধারণত ভারতে আশ্রয় নেওয়ার শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নিয়ম হল, এদেশে টানা ১ বছর থাকতে হবে এবং শেষ ১৫ বছরের মধ্যে ১১ বছর বসবাস করতে হবে। কিন্তু CAA-তে ওই তিন দেশ থেকে ভারতে এসে আশ্রয় নেওয়া ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ১১ বছরের সময়সীমাটা কমে মাত্র ৫ বছর করা হয়েছে।
যদিও বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যদি কোনও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ নিপীড়নের শিকার হয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নেন তবে তিনি CAA-র অধীনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানাতে পারবেন না।
CAA নিয়ে বিতর্ক কোথায়?
CAA নিয়ে মূল বিতর্কের জায়গা হল-
(1) বিরোধীদের অভিযোগ, এই প্রথম ধর্মের ভিত্তিতে ভারতবর্ষের নাগরিকত্ব দেওয়া হতে চলেছে।
(2) কেন ইসলাম সম্প্রদায়ের মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না সেই নিয়ে প্রশ্নের সমাধান এখনও হয়নি।
(3) কেন শুধু বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান-কে বেছে নেওয়া হল সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। প্রতিবেশী শ্রীলঙ্কা, মায়ানমারেও ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অত্যাচারের শিকার হন। তাঁদেরকে কেন CAA-র সুবিধা দেওয়া হবে না সেই নিয়ে বিরোধীদের একটা বড় অংশ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে।
(4) শ্রীলঙ্কায় অত্যাচারিত তামিল হিন্দু’দের ও মায়ানমারে অত্যাচারের শিকার হওয়া সংখ্যালঘু মুসলমানদের কেন CAA-র সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হল তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।
(5) বিরোধীদের অভিযোগ, CAA কার্যকর করে আসলে দেশজুড়ে NRC লাগু করার দিকে একধাপ এগিয়ে যেতে চলেছে মোদি সরকার। এর মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে দেশে প্রথম সামগ্রিক নাগরিকত্ব প্রদান করা হবে।
CAA নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা
(1) আইনত CAA-র সঙ্গে NRC-র কোনও সম্পর্ক নেই।
(2) CAA-র মাধ্যমে কারোর নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া যায় না।
(3) CAA-র কোনও প্রভাব দেশের বর্তমান নাগরিকদের উপর পড়বে না। এই আইনের মাধ্যমে সংখ্যালঘু বা দেশের যে কোনও ধর্মীয় বিশ্বাসের মানুষের নাগরিকত্ব নিয়ে বিন্দুমাত্র চিন্তা নেই।
(4) CAA কার্যকর হওয়ায় বাংলার মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের দীর্ঘদিনের দাবীর নিষ্পত্তি হতে চলেছে।
(5) তবে এটা ঠিক, তিন দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলে এক ধরনের বিভাজনের সূত্রপাত ঘটে গিয়েছে। যদিও CAA-র বিরোধিতা করে দায়ের করা সবকটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। ফলে এটি লাগু করতে আইনত বাধা নেই।
🔥সরকারি সুবিধা, চাকরির সুবিধা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ন আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হয়ে থাকুন।
🔥 এগুলিও পড়ুন 👇👇
👉 এবার DA বাড়ালো মোদি সরকার, কত ছিল কত হলো?
👉 চাষের ক্ষতি হলে টাকা দেবে সরকার! এইভাবে আগেভাগে আবেদন করুন
👉 ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে মোবাইল নম্বর লিঙ্ক থাকলেও সাবধান! নতুন নিয়ম RBI এর
👉 এতদিন উত্তর ভারতে ছুটি থাকত, এবার পশ্চিমবঙ্গেও এইদিন ছুটি থাকবে