একে নির্বাচনী চমক ছাড়া আর কী বলবেন? ভোটের মধ্যেই সরকারি কর্মী ও অবসরপ্রাপ্তদের DA অর্থাৎ মহার্ঘ ভাতা বাড়াতে চেয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হল সরকার। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলায় গোটা দেশজুড়ে আদর্শ আচরণ বিধি জারি হয়েছে।
ইতিমধ্যেই প্রথম দফার ভোট হয়ে গিয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার কারোর পক্ষেই এই মুহূর্তে সরকারি কর্মচারী বা সাধারণ মানুষ কারোর জন্যই নতুন প্রকল্প বা সুবিধার কথা ঘোষণা করা, আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত অবস্থান নেওয়া কিছুই সম্ভব নয়। তবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন যদি বিশেষ ছাড় দেয় সে ক্ষেত্রে সরকার এমন ঘোষণা করতেই পারে।
আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি জারি হওয়ার আগেই কেন্দ্রীয় সরকার তাদের কর্মীদের জন্য ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা করে দিয়েছিল। তার ফলে কোনওরকম অসুবিধা হয়নি। সেই সূত্র ধরেই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা এই মুহূর্তে ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ পাচ্ছেন।
আবার ফেব্রুয়ারি মাসে বাজেট পেশের সময় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে ৪ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছিল এবং সেই সময় সরকার জানিয়েছিল মে মাস থেকে কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই বর্ধিত মহার্ঘভাতার অর্থ ঢুকবে। তাই ভোট প্রক্রিয়া চললেও আগামী মাস পড়লেই রাজ্য সরকারি কর্মীরা ১৪ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পাবেন। এতে আদর্শ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ হবে না।
আরো পড়ুনঃ 4% DA-এর পর সরকারি কর্মীরা পাবে ১২,৬০০ টাকা! কীসের জন্য দেওয়া হবে এই টাকা?
কিন্তু সরকার যদি এখন নতুন করে মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিতে চায় বা ঘোষণা করতে চায় সেটা আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী সম্ভব নয়। আর তাই মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণা এই সময়ে করার জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্রশাসিত জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন।
জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য প্রশাসনের আওতায় থাকা কর্মীরা ৪৬ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা পান। তাঁদের ক্ষেত্রে বরাবরই কেন্দ্রীয় হার অনুসরণ করার একটা রেওয়াজ দেখা গিয়েছে। ফলে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতা ৪ শতাংশ বেড়ে ৫০ শতাংশ হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে কর্মীরা দাবি জানাতে থাকেন। তার জেরে এই রাজ্যের প্রশাসন ঠিক করেছে কেন্দ্রের মতই জম্মু-কাশ্মীরের কর্মীদের মহার্ঘভ ভাতার পরিমাণ আরও ৪ শতাংশ বাড়িয়ে মোট ৫০ শতাংশ করে দেওয়া হবে। সেই কারণেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অনুমতি চেয়েছে তারা।
আরো পড়ুনঃ ৫০০০ টাকা ডাইরেক্ট অ্যাকাউন্টে দেবে সরকার, ভোটের মধ্যেই বিরাট ঘোষনা নেতার
যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের ঘোষণার পর আদর্শ-আচরণ বিধি জারি হতে বেশ কিছুদিন দেরি হয়েছে। তার মধ্যে জম্মু-কাশ্মীর প্রশাসন কেন এই সিদ্ধান্ত নিল না সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। অনেকেই গোটা বিষয়টির মধ্যে প্রশাসনকে ব্যবহার করে শাসক পক্ষের রাজনৈতিক অভিসন্ধি পূরণের উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছেন।