ভারতে নিয়ম হচ্ছে প্রতি বছর অন্তর জনগণনা করতে হবে। আমাদের দেশে শেষ বারের জন্য ২০১১ সালে জনগণনা হয়েছিল। সেই হিসেবে আবার ২০২১ সালে জনগণনা হওয়ার কথা। কিন্তু ২০২০ তে করোনা ভাইরাসের কারনে তা হয়ে ওথেনি।
এবার ১৩ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটল। অনেক বাকবিতণ্ডা পেরিয়ে অবশেষে, সেপ্টেম্বর মাস থেকে দেশে জনগণনা অর্থাৎ আদমশুমারি শুরু হতে পারে। দু’ টি সরকারি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। খবর অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বহু বছরের সমালোচনার পরে তাঁর তৃতীয় মেয়াদে পরিসংখ্যানের এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যবধানটি পূরণ করতে চাইছেন।
১৮ মাসের মধ্যে জনগণনার ফলাফল
১৮৭২ সালে শুরু হওয়া আদমশুমারি রীতি মেনে, ভারতে প্রতি ১০ বছর পর পর আদমশুমারি হয়। কিন্তু শেষ আদমশুমারি ২০১১ সালে পরিচালিত হয়েছিল। তাই ২০২১ সালে আদমশুমারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত ছিল।
কিন্তু কোভিড-19 এর প্রাদুর্ভাবের কারণে সবটা বিলম্বিত হয়েছে। এবার আর সেই বিলম্ব করতে নারাজ মোদী সরকার। তাই বিষয়টির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট দু’ টি সরকারি সূত্র জানিয়েছে, আগামী মাসে শুরু হওয়া আদমশুমারি প্রক্রিয়া প্রায় ১৮ মাসের মধ্যে শেষ করে দেওয়া হবে।
জনগণনা কেন প্রয়োজন?
ইতিমধ্যেই নতুন আদমশুমারির বিলম্ব নিয়ে সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ অর্থনৈতিক তথ্য, মুদ্রাস্ফীতি এবং চাকরির অনুমান সহ অন্যান্য পরিসংখ্যানগত জরিপ নির্ভর করে এই আদমশুমারির উপরই। বর্তমানে, বেশিরভাগ সরকারী প্রকল্পই চলছে ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্যের উপর ভিত্তি করে। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ আপডেটেড যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অনেক সুবিধা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছেন।
তাই এবার, জনগণনার যথার্থতার কথাই ভেবে দেখেছে কেন্দ্র। আধিকারিকরা বলেছেন যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন মন্ত্রক, ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে একটি সময়রেখা প্রস্তুত করেছে। যার অধীনে নতুন আদমশুমারির ফলাফল প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে 2026 সালের মার্চের মধ্যে।
এ বিষয়ে তথ্যের জন্য উভয় মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে ই-মেইলও। এখনও পর্যন্ত কোনও সাড়া আসেনি। এরপরেই একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে আদমশুমারি প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন এলেই শুরু হবে জনগণনা।
জনগণনার জন্য সরকারের খরচ
এদিকে আদমশুমারির প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও, কেন্দ্র ২০২১ সালের আদমশুমারির জন্য এই বছরের বাজেট কমিয়ে দিয়েছে। মূলত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আদমশুমারির জন্য ৮,৭৫৪.২৩ কোটি টাকা এবং জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্ট্রেশন (NPR) আপডেট করার জন্য অতিরিক্ত ৩,৯৪১.৩৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছিল।
এদিকে ২০২৪-২৫ সালের কেন্দ্রীয় বাজেটে, বরাদ্দ কমিয়ে ১,৩০৯ কোটি টাকা করা হয়েছিল, যা ২০২১-২২ সালে নির্ধারিত ৩,৭৬৮ কোটি টাকা থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে কম।
আরো পড়ুনঃ হবে ১০,০০০ টাকা জরিমানা ও ৩ বছরের জেল! এই আধার কার্ড ধরা পড়লেই
সরকারের এই বাজেট কাটছাঁট, এ বছরও আদমশুমারি নিয়ে সংশয় তৈরি করেছে। গত মাসে, কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ হতাশা প্রকাশ করে বলেছিলেন যে অর্থমন্ত্রীর বাজেট ঘোষণায় আদমশুমারির জন্য পর্যাপ্ত তহবিল দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়নি। তাঁর দাবি ছিল যে স্বাধীনতার পর এই প্রথম সময়মতো আদমশুমারি করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার।