ন্যাশনাল মেডিক্যালের আর প্রিন্সিপাল হওয়া হল না সন্দীপ ঘোষের। রাজ্য সরকারের হাতেই অপসারিত হলেন অবশেষে। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায়, সারা দেশে ক্ষোভের পরিবেশ অব্যাহত।
৩১ বছর বয়সী মহিলা ডাক্তারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পর থেকে দেশের অধিকাংশ জায়গায় বিক্ষোভ চলছে। মানবতাকে লজ্জায় ফেলে দেওয়া এই ঘটনার পরেই শিরোনামে রয়েছেন ইনস্টিটিউটের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নাম।
আরজি কর মেডিকেল কলেজের প্রধানের পদ ছাড়ার কয়েক ঘন্টা পরেই কেন সন্দীপ ঘোষকে অন্য একটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়েছিল? আদালত এদিন মমতা সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সরকারি হাসপাতালের সেমিনার হলে মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহ পাওয়া যাওয়ার পর সন্দীপ ঘোষের কর্মকাণ্ড নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট ও কলকাতা হাইকোর্ট।
জানা গিয়েছে, আরজি করে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ঘোষের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ উঠেছে। সেই সময় সন্দীপ ঘোষের অপসারণের দাবিও জানিয়েছেন সমস্ত চিকিৎসক ও পড়ুয়ারা। আন্দোলনের চাপে গত ১২ অগস্ট পদত্যাগ করেন সন্দীপ ঘোষ। স্বাস্থ্য বিভাগে গিয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ সন্দীপকে কলকাতার অন্য ন্যাশনাল মেডিক্যালের প্রিন্সিপাল হিসেবে চাকরি দিয়ে দেয়। এরপর সেখান থেকেও অপসারণের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। তখন কলকাতা হাইকোর্ট সন্দীপকে ‘দীর্ঘ ছুটি’তে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। তারপর থেকে সন্দীপ তো ছুটিতেই ছিলেন। সিবিআই তাঁকে ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
আরো পড়ুনঃ কে এই সন্দীপ ঘোষ? জানুন তার পড়াশোনা ও অন্যান্য গল্প
অবশেষে কেস এবার সুপ্রিম কোর্টের হাতে যেতেই বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়ে বসল রাজ্য সরকার। কারণ এই মর্মান্তিক কাণ্ডের প্রথম থেকেই হাইকোর্ট বাংলার সরকার ও সন্দীপ ঘোষের সম্পর্ক তুলে প্রশ্ন করে আসছে। হাইকোর্টের প্রথম প্রশ্ন হল দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সন্দীপের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কী স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে? ওদিকে সুপ্রিম কোর্টেরও দাবি, ইস্তফার দেওয়ার পরই কেন সন্দীপ ঘোষকে নতুন দায়িত্ব দিল রাজ্য? বিরোধীরাও ছেড়ে কথা বলেননি।
এদিকে, চারদিক থেকে চাপে পড়ে, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে আর বহাল রাখা হল না। তাঁর নিয়োগের নির্দেশিকা প্রত্যাহার করল রাজ্য সরকার। বুধবার সন্ধ্যায় এমনটাই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।