গরমের ছুটি শেষ হয়ে জুন মাসে স্কুল খুললে কীভাবে ক্লাস হবে? এই চিন্তাই এখন কুরে কুরে খাচ্ছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়ে গিয়েছে।
যদিও যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সুযোগ রেখেছে কলকাতা হাইকোর্ট। কিন্তু সেটাও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। এই পরিস্থিতিতে হাইস্কুলের পঠন-পাঠন চলবে কীভাবে হবে তা নিয়ে বেজায় অন্ধকারে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। আপাতত তারা এসএসসির (SSC) দিকে তাকিয়ে আছে।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সরাসরি চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ করতে পারে না। ওই কাজটা এসএসসি করে। তারা শুধু স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশ মত চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দিয়ে থাকে। ২০১৬ সালের যে গোটা প্যানেল কলকাতা হাইকোর্ট বাতিল করে দিয়েছে সে ক্ষেত্রেও নিয়োগপত্রটা মধ্যশিক্ষা পর্ষদই দিয়েছিল।
আরো পড়ুনঃ কৃষক বন্ধুর টাকা কবে ঢুকবে? এইভাবে স্ট্যাটাস চেক করে দেখুন
এই পরিস্থিতিতে এসএসসির মত তারাও কলকাতায় কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবে বলে জানিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় চ্যালেঞ্জ করে যত দ্রুত সম্ভব তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবেন বলে জানান মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের ভিত্তিতে রাজ্যের হাইস্কুল গুলোতে নিয়োগ হওয়া গ্রুপ-সি, গ্রুপ-ডি কর্মীদের পাশাপাশি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি গ্রেডের সকল শিক্ষকের চাকরিও বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
তবে যে যোগ্যদের চাকরি বাতিল হয়েছে তাঁদের জন্য বিকল্প পথের কথা বলেছেন বিচারপতিরা। তবে সেই পথটা ঠিক কী তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। এমন পরিস্থিতিতে এক লপ্তে এত বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি চলে যাওয়ায় বহু স্কুলে পড়ুয়াদের রোলকল করার মতো শিক্ষকও থাকবে না বলে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে।
আরো পড়ুনঃ স্কুলে গরমের ছুটি তো কী হয়েছে, এবার এইভাবে ক্লাস করানো হবে
জেলার এমনও বেশ কিছু স্কুল আছে যেখানে এক ধাক্কায় ২০ জনের বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি করা, পরীক্ষার খাতা দেখা সমস্ত কিছুই ঘেঁটে যাবে।
সবমিলিয়ে আদালতের রায়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার এলেও রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমত ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। তবে এই যাবতীয় অন্ধকার অবস্থা কাটাতে আপাতত সর্বোচ্চ আদালতকেই পাখির চোখ করেছে সব পক্ষ।