দীর্ঘদিন ধরে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের মনে একটাই প্রশ্ন, অষ্টম বেতন কমিশন (8th Pay Commission) কবে আসবে? আর অবশেষে সেই প্রশ্নের উত্তর সামনে আসলো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা চলতি বছরের শুরুতেই নতুন কমিশন গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। এর ফলে আরো উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
কেন দরকার অষ্টম বেতন কমিশনের?
প্রসঙ্গত, প্রতি ১০ বছর অন্তর কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাঠামো, ভাতা এবং পেনশন সংশোধন করা হয়। আর তার জন্য একটি নতুন কমিশন গঠন করা হয়। এর আগে অর্থাৎ, সপ্তম বেতন কমিশন ২০১৬ সালে চালু করা হয়েছিল। আর তার মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর। তাই অনেকেই মনে করছেন যে, ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা হবে।
তবে এখনো পর্যন্ত এই কমিশনের চেয়ারপার্সন নিয়োগ করা হয়নি এবং টার্মস অফ রেফারেন্সের কাজ অনেকটাই বাকি। ফলে এই বেতন কমিশন বাস্তবায়ন হতে এখনো অনেকটা সময় লাগতে পারে বলে মনে করছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ।
কতটা বাড়তে পারে বেতন এবং পেনশন?
অষ্টম বেতন কমিশনের সুপারিশে মোটামুটি ৫০ লক্ষ সরকারি কর্মচারী এবং ৬৫ লক্ষ পেনশনভোগীরা উপকৃত হবেন। মূলত ফিটমেন্ট ফ্যাক্টরের উপর ভিত্তি করেই বেতন ওঠানামা করে। বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, এবার ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ১.৯২ হতে পারে। তাই যাদের বর্তমান বেতন ১৮ হাজার টাকা, তাদের ন্যূনতম বেতন হতে পারে ৩৪,৫৬০ টাকা। আর যদি ফিটমেন্ট ফ্যাক্টর ২.৮৬ হয়, তাহলে যাদের নূন্যতম বেতন ১৮ হাজার টাকা, তাদের ৫১,৪৮০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
ভাতা এবং অন্যান্য পরিবর্তন
মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহার্ঘ ভাতা, বাড়ি ভাড়া ভাতা, ট্রান্সপোর্ট অ্যালাউন্স, ইত্যাদি বাড়বে বলে মনে করছে বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ। হ্যাঁ, চলতি বছরের জুলাই মাসে মহার্ঘ ভাতা বেড়ে ৫৫% হয়েছে, যা আগামী বছরের মধ্যে ৬৬% ছাড়াতে পারে বলেই মনে করছে সবাই।
তবে জানিয়ে রাখি, এই বেতন কমিশন বাস্তবায়ন হতে কিছুটা দেরি হতে পারে। একদিকে বাজেটে এখনো পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ হয়নি। আর অন্যদিকে কমিশনের গঠনও বাকি। মনে করা হচ্ছে, কমিশনের সুপারিশ তৈরি এবং বাস্তবায়নে অন্তত ১৫ থেকে ১৮ মাস সময় লেগে যেতে পারে। তাই আগের মতো যদি দেরি হয়, তাহলে বকেয়া হিসেবে বেতন দিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ১ জুন থেকে বদলে গেল ৮ নিয়ম: LPG সিলিন্ডার থেকে PF, UPI, ফিক্সড ডিপোজিট
কতটা প্রভাব পড়বে এই বেতন বৃদ্ধির?
নতুন বেতন কমিশন মানেই বেতন বৃদ্ধি। এর ফলে সরকারের উপর প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক চাপ পড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। তবে এতে কর্মচারীদের হাতে বাড়তি টাকা আসবে। ফলে বাজারের মূল্যস্ফীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে তাদের জীবন কিছুটা হলেও মসৃণ হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন দেখার, কবে এই বেতন কমিশনের সুপারিশ আসে।