রাত ২ টোর সময় হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে গেলে কিরকম হবে? ঘুম ভেঙে গিয়ে অন্ধকারে কীভাবে রিচার্জ করবেন? স্মার্ট মিটার (Smart Meter) বসানোর নাম শোনা মাত্রই বহু মানুষ এই অভিযোগ করছে। হ্যাঁ, আর সেই কারণেই অনেকেই বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকজন আসতে দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে।
স্মার্ট প্রিপেইড মিটার প্রকল্প নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এখন জোরদার কাজ চলছে। বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থাকে আরো স্বচ্ছ করতে কেন্দ্র সরকারের নির্দেশে এই পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তর। তবে প্রকল্প যতই আধুনিক হোক না কেন, এর বাঁধা রয়েছে। চলুন আজকের প্রতিবেদনে এই স্মার্ট মিটার সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিই।
স্মার্ট মিটার আসলে কী?
স্মার্ট মিটার হল প্রিপেইড ইলেকট্রিক মিটার। অর্থাৎ, আমরা যেমন আগে রিচার্জ করে মোবাইল ফোন ব্যবহার করি, ঠিক তেমনই আগে থেকে রিচার্জ করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে হবে। রিচার্জ ফুরিয়ে গেলেই বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
তবে হ্যাঁ, রিচার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা হবে না। আর এই তথ্য দিয়েছে বিদ্যুৎ দপ্তরের বারাসাত ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার। জানা যাচ্ছে, প্রতিটি স্মার্ট মিটারে ৩০০ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট বকেয়া ব্যবহারের সুবিধা থাকে। অর্থাৎ, রিচার্জ না করলেও আপনি ৩০০ টাকার বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন।
কবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে?
যখন ওই ৩০০ টাকার সীমা পেরিয়ে যাবে, তখনই বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা হবে। তবে হ্যাঁ, শুধুমাত্র অফিস টাইমে অর্থাৎ সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫ টার মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর শনিবার, রবিবার বা সরকারি ছুটির দিনে কোনোরকম সংযোগ কাটা হবে না। এমনকি প্রতিদিন সন্ধে ৫ টা থেকে পর দিন সকাল ১০ টা পর্যন্ত সংযোগ অক্ষত থাকবে। অর্থাৎ, মাঝরাতে হঠাৎ করে অন্ধকার হয়ে যাবে, এমন ভয় পাওয়ার কারণ নেই।
সংযোগ কাটা গেলে কী করবেন?
আপনার সংযোগ একবার কাটা গেলে আপনি খুব সহজে ঘরে বসেই বিদ্যুৎ ফেরত পেতে পারেন। এর জন্য নিজের মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অনলাইনে রিচার্জ করতে হবে বা নিকটস্থ কোনও বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে নগদ বা ডিজিটাল পেমেন্ট করে রিচার্জ করতে পারেন। পেমেন্ট হয়ে গেলে সংযোগ অটোমেটিকে ফিরে আসবে। আর আগের মত মিস্ত্রি ডেকে তার জোড়া লাগানোর কোনরকম ঝামেলা নেই।
আরও পড়ুন: ১ আগস্ট থেকে বন্ধ হচ্ছে সার্ভিস! বদলে যাচ্ছে PhonePe ব্যবহারের সব নিয়ম
স্মার্ট মিটারে বিল বেশি আসে?
বিদ্যুৎ দপ্তরে তরফ থেকে জানানো হয়েছে, স্মার্ট মিটারে বর্তমান ইউনিট হিসাবেই বিল তৈরি করা হচ্ছে। আগে তিন মাসের বিল একবারে আসতো, আর এখন প্রতি মাসে অনলাইনে স্টেটমেন্ট পাওয়া যাবে। ফলে হিসাব হচ্ছে আরো স্বচ্ছ এবং নির্ভুল। তবে অনেকেই অভিযোগ করছে যে, স্মার্ট মিটার বসানোর ফলে বিদ্যুতের বিল নাকি তিনগুণ হয়ে যাচ্ছে।