পথ দুর্ঘটনা রোধ করতে বড় পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রতিদিন রাস্তার দুর্ঘটনার সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে, যার বেশিরভাগ কারণ অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চালানো। তাই রাজ্যের পরিবরণ দপ্তর নতুন একটি গতি নির্ধারণের নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নতুন নিয়মের মাধ্যমে শহর এবং গ্রাম অঞ্চলের রাস্তার জন্য নির্দিষ্ট গতিবিধি বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
নতুন নির্দেশিকার মূল উদ্দেশ্য
রাজ্যের পরিবহন দপ্তর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনার জন্য গাড়ির গতি নির্ধারণের নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই নির্দেশিকা শহরের ব্যস্ত রাস্তাগুলি থেকে শুরু করে গ্রামের রাস্তা পর্যন্ত গাড়ির গতিবিধি আলাদা করে বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
শহরের রাস্তার গতি নিয়ন্ত্রণ
পরিবহন দপ্তরের এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী-
- কলকাতার বাইপাস ও ভিআইপি রোডের মতো খোলা রাস্তায় যানবাহনের গতি সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা রাখতে হবে।
- বাজার, স্কুল, হাসপাতাল এই সমস্ত এলাকায় গাড়ির সর্বাধিক গতি হবে ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।
- যেখানে প্রচুর পরিমাণে টোটো, রিকশা এবং মিনি ট্রাক চলাচল করে সেই সমস্ত অঞ্চলে গাড়ির গতি ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার মধ্যে রাখতে হবে।
- যদি রাস্তায় ২ থেকে ৩ টি লেন থাকে এবং ভারী যানবাহনের সংখ্যা কম হয়, সেখানে বাস বা ট্রাক ঘন্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করতে পারবে। তবে যদি রাস্তার ২ দিকে আলাদা লেন থাকে সেখানে বাস এবং ট্রাক ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে চলতে পারবে।
গ্রামীন এলাকায় গতি নিয়ন্ত্রণ
শুধুমাত্র শহরেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও দুর্ঘটনা রোধ করতে গতি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে পরিবহন দপ্তর। গ্রামীন রাস্তায় পরিবহন দপ্তরের নির্ধারিত মাপকাঠি অনুযায়ী নির্দিষ্ট গতিবিধি চালু করা হবে।
দুর্ঘটনার অন্যান্য কারণ এবং সমাধান
গাড়ির গতি দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হলেও, পথচারীদের রাস্তা দিয়ে হাঁটার প্রবণতাও দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ। ফুটপাতের অভাব ও সেগুলির অনুপযুক্ত অবস্থার জন্য অনেক সময় পথচারীদের রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হয়। যদিও নতুন গতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, তবে ফুটপাত ব্যবহারের সমস্যা সমাধানে এখনও কোনরকম গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: আবাস যোজনা নিয়ে বড়সড় অভিযোগ, ব্যাঙ্কে টাকা ঢোকার পরে সেই টাকা উধাও
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
রাজ্যের মুখ্য সচিব মনোজ পন্থ জানিয়েছেন, পথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই নিয়মগুলি অত্যন্ত জরুরি। গ্রাম এবং শহর উভয় জায়গাতেই দুর্ঘটনা কমানোর জন্য আরো কঠোর নজরদারি চালানো হবে।
পথ নিরাপত্তার এই নতুন নির্দেশিকা রাজ্যের মানুষের জীবনযাত্রাকে আরো সুরক্ষিত করবে বলে আশা করা যায়। তবে গতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন ফুটপাতের উন্নতি, পথচারীদের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ট্রাফিক আইন মেনে চলাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।