ওবিসি তালিকা (OBC Case) নিয়ে এবার বিরাট ধাক্কা খেল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয় যে, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে প্রকাশিত নতুন ওবিসি তালিকা এবং সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তিগুলি আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হচ্ছে।
এমনকি এই রায় শুধুমাত্র তালিকার জন্য নয়, বরং রাজ্য সরকারকে নতুন পোর্টাল চালু করার ঘোষণাকেও থামিয়ে দিয়েছে, যেখানে সম্প্রতি সকল দপ্তরের কাস্ট সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছিল।
কী বলেছে হাইকোর্ট?
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি রাজা শেখার মান্নার ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি উঠেছিল। আদালত জানায়, রাজ্যের তরফ থেকে যে ওবিসি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেই তালিকার ভিত্তিতে জারি হওয়া সমস্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি, এমনকি সম্প্রতি চালু হওয়া অফিসের সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার অনলাইন প্রক্রিয়া ৩১ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করা হচ্ছে।
আগে কী হয়েছিল?
বলে রাখি, ২০২৪ সালের ২২ মে কলকাতা হাইকোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে জানিয়েছিল, ২০১০ সালের পর রাজ্য সরকার যে ওবিসি তালিকা প্রকাশ করেছিল, তা ১৯৯৩ সালের ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস আইন মেনে করা হয়নি। আর এর ফলে ১২ লক্ষ সার্টিফিকেট মুহূর্তের মধ্যে বাতিল হয়ে যায়।
এই ঘটনার পর রাজ্য সরকার নতুন করে সমীক্ষা চালিয়ে একটি তালিকাও তৈরি করে এবং ওবিসি হিসেবে নতুন ১৪০টি জনগোষ্ঠীকে যুক্ত করে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সেই তালিকা ঘোষণাও করে। তবে এই তালিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
আইনি লড়াই কাদের পক্ষে যাচ্ছে?
মামলাকারীরা বলছে, এই তালিকা ও সমীক্ষা আদালতের নির্দেশ মেনে তৈরি করা হয়নি। এমনকি কোনও স্পষ্ট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি বলে জানানো হয়েছে। তবে রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ কমিশন বলছে, সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া মেনেই এই সমীক্ষা হয়েছে এবং রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে। তবে সোমবার হাইকোর্ট রাজ্যের কাছ থেকে এই সমীক্ষার পদ্ধতি এবং যাবতীয় নথি দেখতে চেয়েছিল। তার আগেই মঙ্গলবার এই স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: রোজ ৫০ টাকা করে জমালেই মিলবে লক্ষ লক্ষ টাকা! সেরা স্কিম পোস্ট অফিসের
পরবর্তী শুনানি কবে হবে?
জানিয়ে রাখি, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৪ জুলাই, ২০২৫। আর তার আগে পর্যন্ত ওবিসি তালিকা নিয়ে কোনোরকম সরকারি কার্যক্রম রাজ্য সরকার চালাতে পারবে না বলেই সাফ জানিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এখন দেখার, এদিনের শুনানিতে ঠিক কী রায় দেয় রাজ্যের শীর্ষ আদালত।