ভারতের নাগরিকের পরিচয়পত্র যাচাই করার জন্য আগে ভোটার কার্ড বা রেশন কার্ড ব্যবহার হতো। তারপর আসলো আধার কার্ড (Aadhaar Card)। আর্থিক লেনদেনের জন্য আসলো ইউপিআই। আর এবার ঠিকানার ক্ষেত্রেও ঘটতে চলেছে বিরাট পরিবর্তন।
কেন্দ্র সরকার ভাবছে, এবার দেশের প্রতিটি ঠিকানাকে দেওয়া হবে ইউনিক ডিজিটাল আইডি। হ্যাঁ, এর মাধ্যমে পরিচয়ের জন্য যেমন আধার কার্ড থাকবে, ঠিক তেমনই ঠিকানার জন্য থাকবে আলাদা আধার।
সরকারের কী যুক্তি?
আজকের দিনে অনলাইনে কেনাকাটা বলুন বা খাবার অর্ডার, ডাক পরিষেবা বা কুরিয়ার পরিষেবা, সবকিছু নির্ভর করে ঠিকানার উপরে। অথচ বাস্তব হল যে, দেশের অধিকাংশ ঠিকানা আজও অসম্পূর্ণ, কিংবা অস্পষ্ট।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষা অনুযায়ী, শুধুমাত্র ভুল বা খুঁজে না পাওয়া ঠিকানার কারণে ভারতের অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১০ থেকে ১৪ বিলিয়ন ডলার, যা দেশের জিডিপির মোট ০.৫%। হ্যাঁ ঠিকানার সমস্যা সরাসরি প্রভাব ফেলছে দেশের অর্থনীতিতে।
এবার ঠিকানা হবে ইউনিক ডিজিটাল আইডি
সরকার চাইছে, প্রতিটি ঠিকানাকে এবার ইউনিট ডিজিটাল আইডির আওতায় আনতে। আর যেটি হবে ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের মূল অংশ। আর এই পরিকল্পনার প্রধানত তিনটি অংশ থাকবে। সেগুলি হল-
- একটি ঠিকানা শুধুমাত্র একটি সিস্টেমে ব্যবহার করা হবে।
- ঠিকানার তথ্য কেউ কোনও ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে পারবে না।
- সারা দেশের সমস্ত ঠিকানা একটি নিয়ম বা কাঠামো অনুসরণ করতে হবে।
কী হতে চলেছে এই ডিজিটাল নিয়মে?
এই নতুন ব্যবস্থার নাম হতে পারে ডিজিটাল এড্রেস সিস্টেম। আর এর মূল ভিত্তি হবে একটি Digipin নম্বর। এমনকি Digipin বা ডিজিটাল পোস্টাল ইনডেক্স নম্বর হবে প্রতিটি ঠিকানার জন্য ইউনিক।
জানা যাচ্ছে, এটি হবে ১০ অক্ষরের একটি আলফা নিউমোনিক কোড। আর এই নাম্বারের মাধ্যমে পাওয়া যাবে বাড়ি, দোকান বা ভবনের নির্দিষ্ট অবস্থান। ঠিক যেভাবে আধার নাম্বারের পেছনে একজন ব্যক্তি থাকে, তেমনই Digipin-এর পেছনে থাকবে একটি নির্দিষ্ট ঠিকানা।
আরও পড়ুন: ১০০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা! জুন থেকেই বাড়ছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতা, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
কে বাস্তবায়ন করছে এই উদ্যোগ?
জানা যাচ্ছে, এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দেবে ভারতের ডাক বিভাগ এবং এর গোটা পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অফিসের নজরদারিতেই চলবে। ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে খসড়া জারি হয়েছে। কেন্দ্র সরকার চাইছে, সংসদের আসন্ন অধিবেশনে এই ডিজিটাল এড্রেস সিস্টেম আইন পাস করাতে। এখন দেখার, ভবিষ্যতে কবে এই আইন পাস হয়।