২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কৃষকদের জন্য বিশেষ আর্থিক সুবিধা আনতে পিএম কিষান প্রকল্পে বার্ষিক অনুদান বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
বর্তমানে এই প্রকল্পে কৃষকদের বছরে ৬০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়। তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী এই অর্থ বাড়িয়ে ৮০০০ টাকা থেকে ১২০০০ টাকা পর্যন্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পিএম কিষান প্রকল্পের তথ্য
২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি যোজনা চালু করা হয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে। এই প্রকল্পে দেশের প্রায় ১০ কোটি কৃষক বছরের তিনটি কিস্তিতে ৬০০০ টাকা করে পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ প্রতি কিস্তিতে ২০০০ টাকা পান। কৃষকদের দাবি, বর্তমানে মূল্যবৃদ্ধির বাজারে এই ন্যূনতম অর্থে চাষবাস করা সম্ভব হচ্ছে না।
কৃষক আন্দোলন এবং সরকারের অবস্থান
পাঞ্জাব ও হরিয়ানার কৃষক সংগঠনগুলি লাগাতার আন্দোলন এবং ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (MSP) আইনের গ্যারান্টির দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
কৃষি মন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সুপারিশ করেছে যে, পিএম কিষানের অর্থ বরাদ্দ ৬০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০০০ টাকা করা উচিত। একসঙ্গে ভাগচাষী এবং ক্ষেতমজুরদেরও প্রকল্পের আওতায় আনার প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের চ্যালেঞ্জ
অর্থ মন্ত্রক সূত্র জানে জানা গেছে, পিএম কিষানের অনুদান বাড়ালে বাজেট প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ, ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে যাবে। ফলে এই প্রকল্পের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ করে কৃষি বাজেট বাড়াতে হবে। বর্তমানে কৃষি খাতে মোট বাজেট প্রায় ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা।
কৃষক সংগঠনগুলির প্রতিক্রিয়া
সংযুক্ত কিষান মোর্চা জানিয়েছে, শুধুমাত্র পিএম কিষানের টাকা বাড়ানো দিয়ে কৃষক আন্দোলন থামানো সম্ভব হবে না। ফসলের দামের আইনি গ্যারান্টি নিশ্চিত করা এবং তিনটি কৃষি আইন পুনর্বহালের প্রচেষ্টা বন্ধ করা জরুরী। তবেই এই কৃষক আন্দোলন বন্ধ হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনা
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ইতিমধ্যেই কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যদিও এখনো পর্যন্ত সরকার পিএম কিষান প্রকল্পের বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনরকম ঘোষণা করেনি।
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষায় বড় দুর্নীতি, যেকোনো সময় এই শিক্ষকদের চাকরি চলে যেতে পারে
আগামী কেন্দ্রীয় বাজেটে এই প্রকল্পের অনুমোদন বাড়ানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। তবে কৃষকদের দাবি পূরণের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
কৃষি ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য বাড়ানোর এই পরিকল্পনা যদি বাস্তবায়ন করা হয়, তবে তা কৃষকদের জন্য খুবই আনন্দের খবর। তবে এর পাশাপাশি কৃষি ক্ষেত্রে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দাবিগুলোর প্রতি সরকারের নজর দেওয়া উচিত।