রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন কোন ঘটনা নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে প্রায় দুই বছর আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের বরাদ্দের অনুদান। বারবার আবেদন করা সত্ত্বেও কেন্দ্র সরকার কোন সাড়া দেয়নি। এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এই প্রকল্পের অর্থ সরবরাহ করা হবে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্য সরকারের তরুনের স্বপ্ন প্রকল্পের ট্যাবের টাকা নিয়ে একাধিক জালিয়াতির ঘটনা সামনে এসেছে। এর ফলে আবাস যোজনা প্রকল্পেও আরো কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করল রাজ্য সরকার। গ্রাহকদের অর্থ সুরক্ষিত করতে এবং আর্থিক জালিয়াতি বন্ধ করতে চালু করা হয়েছে নতুন পোর্টাল।
গ্রাম পঞ্চায়েতে বিশেষ ক্যাম্প
এই নতুন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করা হবে। সেই ক্যাম্পে উপভোক্তাদের পরিচয়পত্র এবং অন্যান্য ডকুমেন্ট কঠোরভাবে যাচাই করা হবে।
সমস্ত ডকুমেন্ট যাচাই করা হলে সবকিছু যদি সঠিক প্রমাণিত হয় তাহলেই ক্যাম্প থেকে অনুমোদন দেওয়া হবে। এরপর উপভোক্তারা তাদের আবাস যোজনার অর্থ সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাবেন। প্রতিটি বিডিও অফিসে এর জন্য প্রয়োজনীয় নিয়মাবলীর তালিকা পাঠানো হয়েছে।
আধার এবং OTP-এর মাধ্যমে পরিচয়পত্র যাচাই
এবার থেকে নতুন পোর্টালের মাধ্যমে উপভোক্তাদের আধার কার্ডের সঙ্গে নামের সংযুক্তিকারণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া মোবাইল নাম্বারের সঙ্গে সংযুক্তি করা আধার নাম্বারের মাধ্যমে OTP-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
এর পাশাপাশি বায়োমেট্রিক পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রাহকদের পরিচয় নিশ্চিত করার ব্যবস্থা রয়েছে। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হওয়ার পরই উপভোক্তার নাম চূড়ান্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং সেই উপভোক্তা এই প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ পাবেন।
SMS-এর মাধ্যমে তথ্য প্রদান
যে সমস্ত গ্রাহকরা এই প্রকল্পের জন্য নির্বাচিত হবেন তাদের মোবাইল নাম্বারে এই বিষয়ে SMS পাঠানো হবে। এই SMS-এর ভিত্তিতেই উপভোক্তাদের এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তি করা হবে এবং তাদের প্রাপ্য অর্থ তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো হবে।
এই নতুন পদক্ষেপে শুধুমাত্র জালিয়াতি বন্ধ হবে না, বরং প্রকৃত উপভোক্তারা সহজেই তাদের প্রাপ্য সুবিধা পাবেন। রাজ্যের এই উদ্যোগ আবাস যোজনার কার্যক্রমের স্বচ্ছতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।