শিক্ষা মহলে নতুন করে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরিতে ভুয়ো এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ কার্ড ব্যবহারের অভিযোগে ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে। কলকাতা হাইকোর্ট এই সংক্রান্ত মামলায় একটি বড় নির্দেশ জারি করেছে।
মামলার পটভূমি
২০০৯ সালে বাম আমলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ ছিল অনেক প্রার্থী ভুয়ো এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়। আগে সিআইডি তদন্তে কিছু প্রমাণ মিলেছিল এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২৬ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল।
হাইকোর্টের নতুন নির্দেশ
গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে এই মামলার শুনানি হয়। আদালত নির্দেশ দেয় যে-
- প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়া সমস্ত শিক্ষকদের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ কার্ড যাচাই করতে হবে।
- রাজ্যের ২২ টি জেলার প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলগুলোকে এই যাচাইয়ের কাজ করতে হবে।
- সিআইডি তদন্তের বৃহত্তর জালিয়াতের ইঙ্গিত পেলে সিট (Special Investigation Team) গঠন করার সম্ভাবনা রয়েছে।
- শিক্ষা দপ্তরের কমিশনারকে আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে আদালতে গিয়ে এই মামলার রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
কেন এমন নির্দেশ?
মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট জানিয়েছিল, এক্সচেঞ্জ কার্ড ব্যবহার করে চাকরি পাওয়া শুধু উত্তর ২৪ পরগনা জেলাতে সীমাবদ্ধ নয়, রাজ্যের অন্যান্য জেলাগুলোতে এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তাই সব জেলায় কার্ড যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই নির্দেশ শিক্ষকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। অনেকে তাদের চাকরি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। বিশেষ করে যারা ২০০৯ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিযুক্ত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: হু হু করে কমছে বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার, কী হবে ভারতের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ?
বিশেষজ্ঞদের মতামত
বিশেষজ্ঞদের মতে এই নির্দেশ প্রাথমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তবে এটি শিক্ষকদের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। ২৭শে জানুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। সিআইডির প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে ওই দিনে।
প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে আদালতের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্য শিক্ষা দপ্তর এবং সিআইডির উপর এখন নজর রয়েছে। ২৭ জানুয়ারি শুনানিতে পরিস্থিতি কোন দিকে গরায়, এখন সেটাই দেখার।