বর্তমান সময়ে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা নিয়ে এক বড় প্রতারণার অভিযোগ সামনে এসেছে। এই সরকারি প্রকল্পের টাকার জন্য গ্রাহকদের বর্তমানে সম্মুখীন হতে হচ্ছে সাইবার জালিয়াতির মুখে। সাইবার প্রতারকরা গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা সরিয়ে নিয়ে নিজেদের অ্যাকাউন্টে তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।
ফলে এই প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে অনেক মহিলা এখন চিন্তায় রয়েছেন এবং নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চেক করতে বাধ্য হচ্ছেন। আজকের প্রতিবেদনে জেনে নিন এই সাইবার জালিয়াতির কাহিনী এবং এর বিরুদ্ধে সরকারের পদক্ষেপগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন না অনেক গ্রাহক
বর্তমানে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প ছাড়াও রাজ্যের অন্যান্য প্রকল্প যেমন তরুণের স্বপ্ন, বার্ধক্য ভাতা ইত্যাদি প্রকল্পেও সাইবার প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। যদিও রাজ্য সরকার থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাঠানো হয়েছে, তবে অনেক সুবিধাবীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা এখনো পৌঁছায়নি।
এই বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে যে, সাইবার প্রতারকদের কৌশলে সরাসরি টাকা চলে যাচ্ছে তাদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে। ফলে সাধারণ মানুষ এই প্রকল্পগুলি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এই টাকাগুলি কোথায় যাচ্ছে?
তদন্তে জানা যাচ্ছে ঝাড়খন্ড, রাজস্থান এবং বিহারের কিছু বিশেষ সাইবার প্রতারকরা এই প্রতারণায় জড়িত। এরা প্রযুক্তির সাহায্যে সরকারি পোর্টাল হ্যাক করে সাধারণ মানুষের টাকা সরাসরি তাদের নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে তুলে নিচ্ছে। এরা প্রথমে সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টের বদলে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বসিয়ে দিচ্ছে। ফলে সরাসরি সেই টাকা তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ২২০ টি অ্যাকাউন্ট সনাক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৮৪ টি অ্যাকাউন্ট ইতিমধ্যে ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছে।
এই প্রতারণার পেছনে কারা?
এই প্রতারণার সঙ্গে বড় একটি চক্র যুক্ত বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। পূর্ব বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ এবং নদীয়া জেলা ছাড়া অন্যান্য রাজ্য যেমন রাজস্থান ও বিহারের কয়েকটি গ্যাং এই প্রতারণায় সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে। এই সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মালিকদের চিহ্নিত করার জন্য রাজ্য পুলিশ প্রশাসন এখন থেকেই তৎপর হয়েছে।
রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া
এই প্রতারণা প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্য সরকার এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য এবং সাধারণ মানুষদের এই প্রকল্পগুলি থেকে বঞ্চিত না করার উদ্দেশে একাধিক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দোষীদের চিহ্নিত করে করার শাস্তি দেওয়া হবে এবং যে ছাত্রছাত্রীরা তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পের ট্যাবের টাকা পাননি, তাদের জন্য পুনরায় অর্থ প্রদান করা হবে। কোন সাধারণ মানুষ এই প্রকল্পগুলি থেকে বঞ্চিত হবে না।
আরও পড়ুন: Airtel ও BSNL-এর টেনশন বাড়ালো, Jio-র এই রিচার্জ প্ল্যান
সরকারি প্রকল্পের টাকা নিয়ে প্রতারণা শিকার হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সকল সুবিধাভোগীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নিয়মিত চেক করতে এবং কোন অসুবিধা লক্ষ্য করলে অবিলম্বে নিকটস্থ ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করতে নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য সরকার।