কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের বিষয়ে আলোচনা চলছে। সবাই জানতে চাইছে সরকার কবে অষ্টম বেতন কমিশন কার্যকর করবে এবং কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি কতটা হবে। ৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখের লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরীর একটি বিবৃতিতে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দিয়েছে।
সরকারের অবস্থান
পঙ্কজ চৌধুরী জানিয়েছিলেন, বর্তমানে অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের কোনরকম পরিকল্পনা নেই। সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী কর্মচারীদের বেতন এবং অন্যান্য ভাতা নির্ধারণ করা হচ্ছে। এই বিবৃতি সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য প্রকাশ করছে এবং সেই সমস্ত জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে খুব শীঘ্রই অষ্টম বেতন কমিশন গঠন করা হবে।
সপ্তম বেতন কমিশনের পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি
সপ্তম বেতন কমিশন কার্যকর হয়েছে ১ লা জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখ থেকে। এর অধীনে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন ১৮০০০ টাকা এবং সর্বাধিক ২.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়। তবে বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি, বাজারে জিনিসের উচ্চমূল্য ও জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান খরচ বাড়ার কারণে কর্মচারীরা নতুন বেতন কমিশনের দাবি জানিয়েছেন।
মহার্ঘ ভাতা
কেন্দ্রীয় সরকার কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর জন্য মহার্ঘ ভাতা সংশোধন করে থাকে। এটি প্রতি ৬ মাস অন্তর সংশোধন করা হয়। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা ৫৩% হারে মহার্ঘ ভাতা পায়, যা ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বাড়িয়ে ৫৬% করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি কর্মচারীদের সাময়িক স্বস্তি দিলেও নতুন বেতন কমিশনের প্রয়োজনীয়তা থেকেই যাবে।
কর্মচারী সংগঠনগুলির দাবি
বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছে অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের জন্য। তারা বলছে, বর্তমান বেতন কাঠামো সরকারি কর্মীদের জন্য যথেষ্ট নয় এবং কর্মচারীরা প্রতি ১০ বছরের পরিবর্তে ৫ বছর অন্তর বেতন সংশোধনের দাবি জানাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাতিল হওয়া ২০০০ টাকার নোটগুলি কোথায় গেল? কি করল RBI এই নোটগুলি দিয়ে?
বর্তমানে সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে নতুন বেতন কমিশন গঠন হবে না। তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি উন্নতি হলে এবং কর্মচারী সংগঠনগুলির চাপ অব্যাহত থাকলে সরকার এই বিষয়ে পুনরায় সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অষ্টম কমিশন নিয়ে কর্মচারীদের মধ্যে কৌতূহল থাকলেও সরকারের দেওয়া বিবৃতি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে এই মুহূর্তে অষ্টম বেতন কমিশন গঠনের কোনো রকম সম্ভাবনা নেই।