মার্চ মাসে কেন্দ্র সরকার মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) ২ শতাংশ বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী এবং পেনশনভোগীদের কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল। জানা যাচ্ছে, ৫৩ শতাংশ থেকে বেড়ে ডিএ দাঁড়িয়েছিল ৫৫ শতাংশ। কিন্তু এবার আসতে চলেছে এক বড় ধাক্কা। পরবর্তী ডিএ বাড়ার আশায় যারা বসে ছিলেন, তাদের জন্য এবার হতাশার খবর অপেক্ষা করছে।
বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, এবার ডিএ বাড়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। এমনকি ২ শতাংশ কম হতে পারে ডিএ, অথবা পুরোপুরি স্থগিত হতে পারে। কিন্তু কেন এরকম আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে? চলুন জেনে নিই আজকের প্রতিবেদনে।
কেন ডিএ বৃদ্ধির হার কমছে?
২০১৯ সালের পর করোনা মহামারীর ধাক্কায় একটানা ৩ কিস্তি ডিএ বৃদ্ধি স্থগিত ছিল। আর এরপর ২০২১ সালে ডিএ বৃদ্ধি চালু হয় এবং একাধিকবার কেন্দ্র সরকার ৩ থেকে ৪ শতাংশ করে ডিএ বাড়িয়েছিল। কিন্তু গত কয়েকবার ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ডিএ বৃদ্ধির হার অনেকটাই ধীর। এছাড়া ২ শতাংশের বেশি ডিএ বাড়াতেই পারছে না সরকার।
আর এর মূল কারণ হিসেবে কেন্দ্র সরকার জানাচ্ছে, খুচরা মুদ্রাস্ফীতির হার কমে যাওয়া। সম্প্রতি একটি তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে জানা যাচ্ছে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই ৩ মাস ভোক্তামূল্য সূচক হ্রাস পেয়েছে। মার্চ মাসের সিপিআই দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩.৩৮ শতাংশ। যেখানে ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৩.৬১ শতাংশ। আর এই পরিসংখ্যান গত ৫ বছরের মধ্যে সবথেকে কম।
সিপিআই কমলে কেন ডিএ কমে?
আসলে মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ নির্ধারণের মূল সূচক হচ্ছে সিপিআই। সিপিআই বাড়লে ডিএ বাড়ে এবং সিপিআই কমলে ডিএ কমে। কারণ মহার্ঘ ভাতা হলো কর্মীদের বেতন এবং জীবনযাত্রার খরচের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার একটি উপায়।
যখন জিনিসপত্রের দাম স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, তখন কর্মীদের অতিরিক্ত খরচের সামাল দিতে সরকার ডিএ বাড়ায়। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম যখন বাড়ে না, তখন ডিএ বাড়ানোর প্রয়োজন হয় না, সরকারের যুক্তি এটাই।
আগামী দিনে কি হতে পারে?
বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছে, জুলাই মাস থেকে ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে ডিএ বৃদ্ধির হার কম থাকতে পারে। যদি মুদ্রাস্ফীতি এরকমভাবে নেমে আসে, তাহলে ডিসেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ বৃদ্ধির হার ২ শতাংশ নীচে নামতে পারে। এমনকি শুন্যে এসেও দাঁড়াতে পারে।
আরও পড়ুন: ১০ বছর হলেই খোলা যাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মিলবে ATM! কড়া নির্দেশিকা RBI-র
কারা প্রভাবিত হবেন?
ডিএ বৃদ্ধির হার হ্রাসের ফলে দেশের প্রায় ৪৮ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীরা এবং ৭৪ লক্ষ পেনশনভীরা সরাসরি প্রভাবিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ তারা প্রত্যেকে ডিএ বৃদ্ধির অপেক্ষায় ছিলেন। তাই ডিএ না বাড়লে তাদের বেতন, ভাতা এবং ব্যয় পরিকল্পনায় বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।