শিক্ষক নিয়োগে ভয়াবহ দুর্নীতির পরিণামে কি ছারখার হয়ে যাবে বাংলার ভবিষ্যৎ? সপ্তাহখানেক আগেই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের এসএসসি’র ভিত্তিতে নিয়োগ করা গোটা প্যানেল বাতিল করে দিয়েছে।
এর ফলে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী ইতিমধ্যে চাকরি হারিয়েছেন। যদিও যোগ্যদের খুঁজে বার করে পরবর্তীতে পুনর্নিয়োগ করার একটা সংস্থান এখানে রাখা হয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে আরও বড় সংখ্যক শিক্ষকের চাকরি যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হল। এবার হয়ত প্রায় ৭০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিল করে দিতে পারে আদালত!
২০১৪ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি প্যানেলের মাধ্যমে ২০১৬, ২০২০, ২০২২ এবং ২০২৪ সালে শিক্ষক নিয়োগ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। সবমিলিয়ে প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক ওই টেট পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে এখন পর্যন্ত নিয়োগ করা হয়েছে।
আরো পড়ুনঃ মে মাসে লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা কবে ঢুকবে? এইভাবে পেমেন্ট চেক করে দেখুন
কিন্তু যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়া প্রার্থীদের একাংশ এই নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়ার খতিয়ে দেখতে তদন্ত করে সিবিআই। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির রাজাশেখর মান্থার এজলাসে ওই নিয়োগ দুর্নীতি বিতর্কের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট পেশ করেছে।
সিবিআই-এর রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, এসএসসির মতই ২০১৪ এর প্রাথমিক টেট পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে যে ৭০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে তাতেও ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়া, অকৃতকার্যদের পাস করিয়ে চাকরি দেওয়া, যোগ্যদের বঞ্চিত করে চাকরি দেওয়ার মত ভুরি ভুরি ঘটনা ঘটেছে।
এরপরই বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে জানান, এমনটা হয়ে থাকলে গোটা প্যানেল বাতিল করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না!
আরো পড়ুনঃ ভোটের মধ্যে সরকারি কর্মীদের চাপ বেড়ে গেল, এমনটা হবে কেউ ভাবেনি
বিচারপতির এই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের কথা জানাজানি হতেই ৭০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের আশঙ্কা তীব্র হয়েছে। তবে এই বিষয়ে আদালত এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। বিচারপতি ৮ সপ্তাহ পর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। তার মধ্যে এই মামলার সঙ্গে জড়িত সব পক্ষকে হলফনামা দিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে হবে। পাশাপাশি বিচারপতি জানিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে চাকরিপ্রার্থীদের বৈধ ওএমআর শিট হাজির করতে হবে।