কাশ্মীরের (Kashmir Attack) বুকে ফের রক্তাক্ত অবস্থা। ফের আতঙ্কে আবার জঙ্গি তাণ্ডব। আর এবার হামলার কবলে পড়লো নিরপরাধ পর্যটকরা। হ্যাঁ, পহেলগাঁওয়ের শান্ত পাহাড়ি পরিবেশে ছিন্নভিন্ন করে দিয়ে ২৬ জন পর্যটকদের গুলি করে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। আর এই মামলার পর গোটা দেশ যেন স্তব্ধ। কিন্তু এবার মোদি সরকার একের পর এক হুঁশিয়ারি জারি করেছে পাকিস্তানকে।
সূত্রের খবর, এই হামলার পেছনে সরাসরি পাকিস্তান মদতের প্রমান পেয়েছে কেন্দ্রের গোয়েন্দা সংস্থা। সে কারণেই একের পর এক কড়া পদক্ষেপ জারি করেছে মোদি সরকার।
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক
হামলার খবর পাওয়া মাত্রই রাতে নিজের বাসভবনে জরুরী নিরাপত্তা বৈঠক ডাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের পর ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত
১৯৬০ সালের ঐতিহাসিক সিন্ধু জলচুক্তি আপাতত স্থগিত করে রাখা হয়েছে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে। পাকিস্তান সীমান্ত পাড়ে জঙ্গি কার্যকলাপ যদি বন্ধ না হয়, তাহলে এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলেই জানা যাচ্ছে।
আটারি চেকপোস্ট বন্ধ
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার আটারি ইন্টিগ্রেটেড চেকপোষ্ট সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। পূর্বে অনুমতি থাকা পাকিস্তানি নাগরিকদের আগামী ১লা মে, ২০২৫ এর মধ্যেই দেশে ফিরে যেতে হবে।
SAARC ভিসা বাতিল
সূত্রের খবর, পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য SAARC ভিসার সমস্ত ছাড় বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগে থেকে যারা ভারতে এসেছিলেন, তাদের আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে।
হাই কমিশনের কর্মী সংখ্যা কমানো
উভয় দেশেরই হাই কমিশনের কর্মী সংখ্যা এবার ৫৫ থেকে ৩০ করা হয়েছে। আর এই পরিবর্তন কার্যকর হবে আগামী ১লা মে, ২০২৫ থেকে। এমনটাই জারি করেছে কেন্দ্র সরকার।
সামরিক উপদেষ্টাদের বহিস্কার
সূত্রের খবর, দিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানের সেনা, নৌ এবং বিমান উপদেষ্টাদের ‘পারসোনা নন গ্রাটা’ নিয়ম ঘোষণা করে এক সপ্তাহের মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর একইভাবে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় উপদেষ্টাদেরকেও ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে।
আরও পড়ুন: UPI, ATM থেকে ন্যূনতম ব্যালেন্স! ১লা মে থেকে বদলাতে চলেছে ব্যাংকের সব নিয়ম
প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর হুঁশিয়ারি
এদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এই জঘন্য ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি জানান, জঙ্গিদের কাউকেই রেয়াত করা যাবে না। ভারত যেকোনো পরিস্থিতির জন্যই প্রস্তুত। শুধু সময় হলে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। আর এই মন্তব্যের পর থেকেই নতুন করে সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা শুরু হচ্ছে।
এখন গোটা দেশজুড়ে ঝড় বয়ে চলেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন পহেলগাঁও অ্যাটাক মানুষের মুখে মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে একটাই প্রশ্ন, আর কতদিন এভাবে মানুষের রক্ত ঝরবে?