ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য এবার বড়সড় দুঃসংবাদ। বর্তমানে মুম্বাইয়ের একটি বড় কো-অপারেটিভ ব্যাংক গভীর সংকটের মুখে। নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্য এখন বড় ধাক্কা। কারণ আগামী ৬ মাসের জন্য এই ব্যাংক থেকে কোনরকম টাকা তোলা যাবে না। সম্প্রতি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এই ব্যাংকের বিরুদ্ধে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যার ফলে গ্রাহকদের চিন্তা আরও বেড়ে গেছে।
কেন এই নিষেধাজ্ঞা?
একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে ব্যাংকটি বড় ধরনের লোকসানের মুখোমুখি হচ্ছিল। ফলে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের নজরদারিতে আসে এই ব্যাংকটি। ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ১৩ই ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী ৬ মাস এই ব্যাংকে কোনরকম লেনদেন করা যাবে না।
RBI-এর একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্যাংকের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে কোনরকম সেভিংস অ্যাকাউন্ট, কারেন্ট অ্যাকাউন্ট বা অন্য কোন অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা যাবে না।
কতজন গ্রাহক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন?
সংবাদসূত্রের একটি তথ্য অনুযায়ী, নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাংকে বর্তমানে ১.৩ লক্ষেরও বেশি গ্রাহক হয়েছেন। ৯০ শতাংশ গ্রাহকের একাউন্টে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা হয়েছে। ব্যাংকের মোট ২৮টি শাখার মধ্যে বেশিরভাগই মুম্বাইয়ে অবস্থিত। এছাড়া গুজরাটের সুরাটে ২টি শাখা এবং পুনেতে ১টি শাখা রয়েছে।
আসল ঘটনা কী?
সম্প্রতি ব্যাংকের হিসাব সংক্রান্ত কিছু ত্রুটি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের কাছে ধরা পড়েছে। RBI এই ব্যাংকের বোর্ড ভেঙ্গে দিয়ে এক প্রশাসক নিয়োগ করে এবং তার সহায়তার জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটিও গঠন করা হয়।
এরপর মুম্বাই পুলিশ নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাংকের জেনারেল ম্যানেজার এবং অ্যাকাউন্টস হেডের বিরুদ্ধে ১২২ কোটি টাকা আত্মসাৎ-এর অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে চালু হল রানী লক্ষ্মীবাই স্কুটি যোজনা, প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে স্কুটি দিচ্ছে রাজ্য সরকার
গ্রাহকদের টাকা কি নিরাপদ?
এমন পরিস্থিতিতে সবথেকে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, গ্রাহকদের জমা টাকা কি হবে? বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী যদি কোন ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায় বা দেউলিয়া হয়ে যায় তাহলে গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমা পান। ২০২০ সালে পিএমসি ব্যাংক কেলেঙ্কারির পর DICGC বীমার পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করে। তবে সরকার ভবিষ্যতে এই পরিমাণ আরও বাড়াতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।
নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাংকের এই সংকট অনেক গ্রাহকদের জীবনকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে। ৬ মাস পর পরিস্থিতি কি হবে, তা এখনই কঠিন। তবে সরকার এবং ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের কড়া নজরদারিতে রয়েছে এই ব্যাংক। গ্রাহকদের প্রতি পরামর্শ, তারা যেন ব্যাংকের পরবর্তী ঘোষণার দিকে নজর রাখেন এবং তাদের আর্থিক পরিকল্পনা সঠিকভাবে করেন।