বর্তমান সময়ে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রান্নার জন্য এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হয়। এটি যেমন সুবিধাজনক, তেমনি এর ভুল ব্যবহারের ফলে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে গ্যাস লিকেজ একটি অত্যন্ত বিপদজনক পরিস্থিতি তৈরি করে।
সঠিক পদক্ষেপ না দিলে এটি বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। যদি কখনো নাকে গ্যাসের গন্ধ আসে বা মনে হয় সিলিন্ডার লিক করেছে তবে আতঙ্কিত না হয়ে সঙ্গে সঙ্গে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।
গ্যাস লিকেজের সময় জরুরী পদক্ষেপ
যদি মনে করেন আপনার বাড়ির গ্যাস সিলিন্ডারে কোনরকম লিকেজ হয়েছে তাহলে নিন্মলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করতে পারেন-
১. গ্যাসের নব বন্ধ করুন
রান্না করার সময় যদি নাকে গ্যাসের গন্ধ আসে তবে সবার আগে গ্যাস ওভেনের নব এবং রেগুলেটরের নব বন্ধ করুন। এটি গ্যাস লিক বন্ধ করতে সাহায্য করে।
২. জানালা দরজা খুলে রাখুন
ঘরের ভেতরে যদি গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে তবে দ্রুত জানলা ও দরজা খুলে দিন, যাতে গ্যাস বেরিয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন এলপিজি গ্যাস হাওয়ার থেকে বাড়ি এবং এটি মাটির দিকে বয়ে যায়। তাই অবশ্যই জানালা দরজা খুলে রাখা উচিত।
৩. অগ্নি সংযোগ বন্ধ করুন
ঘরে যদি কোন রকম প্রদীপ, ধূপকাঠি বা মোমবাতি জ্বলতে থাকে তবে সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো নিভিয়ে দিন। কোন অবস্থাতেই ঘরের মধ্যে আগুন জ্বালাবেন না।
৪. সিলিন্ডার সরিয়ে দিন
সিলিন্ডারে সেফটি ক্যাপ লাগিয়ে সেটি রান্নাঘর থেকে খোলা জায়গায় বাইরে বের করে রাখুন। সিলিন্ডারকে ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন, যাতে গ্যাসের বিস্তার কিছুটা কমানো যায়।
৫. বৈদ্যুতিক সুইচ বন্ধ করুন
ঘরের সমস্ত বৈদ্যুতিক সুইচ এবং যন্ত্রপাতি বন্ধ করে রাখুন। গ্যাসের সংস্পর্শে বৈদ্যুতিক স্পার্ক বড় বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
৬. ফ্যান ব্যবহার করবেন না
অনেকেই ভাবেন ফ্যান চ্যানেলে গ্যাস উবে গিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু এটি বিপদ বাড়াতে পারে। কারণ ফ্যানের সংস্পর্শে আগুনের ঝুঁকি তৈরি হয়।
৭. এলপিজি ডিলারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন
দ্রুত আপনার এলপিজি ডিলার বা কাস্টমার কেয়ার নাম্বারে যোগাযোগ করুন। তারা দ্রুত এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।
৮. মুখ ঢেকে রাখুন
গ্যাস লিকেজের সময় মুখে ভেজা কাপড় বা রুমাল বাঁধুন, যাতে গ্যাস শ্বাসনালিতে প্রবেশ না করতে পারে।
গ্যাস লিকেজের কারণ কি হতে পারে?
বিভিন্ন কারণে গ্যাস লিকেজ হতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম কারণগুলি হল-
- গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরে সমস্যা,
- গ্যাস ওভেনের পাইপে ফাটল বা ছিদ্র,
- সিলিন্ডারের সঠিক সংযোগ না থাকা।
আরও পড়ুন: ২৬ জানুয়ারি থেকে টাকা ২১০০ টাকা ঢুকবে মহিলাদের ব্যাঙ্কে, আপনি পাবেন তো?
গ্যাস লিকেজ প্রতিরোধে করণীয়
- প্রতি ছয় মাস অন্তর রেগুলেটর এবং পাইপ চেক করতে হবে।
- গ্যাস সংযোগের সময় সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে।
- রান্নাঘরে সিলিন্ডার সবসময় সোজাভাবে রাখতে হবে।
- রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল নিশ্চিত করতে হবে।
গ্যাস সিলেন্ডার লিকেজ একটি মারাত্মক বিপদের কারণ হতে পারে। তাই সঠিক পদক্ষেপ এবং সর্তকতা নেওয়া অত্যন্ত জরুরী। উপরের নির্দেশাবলী মেনে চললে আপনি বড় দুর্ঘটনায় এড়াতে পারবেন। মনে রাখবেন সচেতনতা আর সঠিক পদক্ষেপ বিপদ থেকে বাঁচাতে পারে।