বিধবা না হয়েও বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী না হয়েও মানবিক ভাতা! রাজ্যে সরকারি প্রকল্পে দুর্নীতি ভরে গেছে

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জনপ্রিয় প্রকল্প লক্ষীর ভান্ডার নিয়ে আবারো বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসলো। সম্প্রতি শান্তিপুরে এই প্রকল্পের নাম করে ভুয়ো ভাতা গ্রহণের একটি ঘটনা সামনে এসেছে। এরপর প্রশাসন তদন্ত শুরু করলে সেখান থেকে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে।

লক্ষীর ভান্ডারের নামে বিধবা ভাতা 

কিছুদিন আগেই অভিযোগ উঠেছিল, শান্তিপুরে শেফালী দে নামের এক গৃহবধূ লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের আওতায় আর্থিক সাহায্যের বদলে বিধবা ভাতা প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য পাচ্ছিলেন। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হল, তার স্বামী বেঁচে থাকা সত্ত্বেও তিনি এই ভাতা পাচ্ছিলেন। অভিযোগ ওঠে এক স্থানীয় তৃণমূল নেতা ৩০০০ টাকার বিনিময়ে তাকে এই সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন।

তদন্তের রিপোর্ট

এই অভিযোগে তদন্ত করতে গিয়ে প্রশাসন জানতে পারে, শুধু শেফালী দে নন, শান্তিপুর ব্লকে এমন আরও ৮২ জন উপভোক্তা রয়েছে, যারা ভুয়ো অর্থ পাচ্ছেন। এদের মধ্যে কেউ বিধবা না হলেও বিধবা ভাতা নিচ্ছেন, কেউ প্রতিবন্ধী না হয়েও মানবিক ভাতা নিচ্ছেন, আবার কেউ ৬০ বছরের আগে বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন।

দুর্নীতির ধরন

তদন্তে উঠে এসেছে যে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা ভুয়া নথি ব্যবহার করছেন। কিছু কিছু ক্ষেত্রে জাল আধার নম্বর ব্যবহার করে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। যোগ্য না হয়ে ভাতা পাওয়ার জন্য জাল শংসাপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। 

এই অনিয়মগুলির বেশিরভাগই হয়েছে করোনা মহামারীর সময়। যখন সরকারি প্রকল্পগুলি পরিচালনার জন্য থার্ড পার্টি সংস্থা নিয়োগ করা হয়েছিল। 

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

তদন্তে প্রশাসনের পদক্ষেপ

শান্তিপুর ব্লকে বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের অধীনে ৩২ হাজার ভাতা প্রাপক রয়েছেন। তাদের প্রোফাইল খতিয়ে দেখে অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে প্রশাসন। অভিযুক্ত ৮২ জন ভাতা প্রাপকের কাছ থেকে আসল ডকুমেন্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

আরও পড়ুন: রাজ্যের এই প্রকল্প নিয়ে বড় ঘোষণা করল মুখ্যমন্ত্রী, একবারে ব্যাঙ্কে ২৫ হাজার টাকা ঢুকবে

অতিরিক্ত তদন্তের পরিকল্পনা

শান্তিপুরের বিডিও জানিয়েছেন, বর্তমানে ৭০০০ প্রতিবন্ধী ভাতা প্রাপকের ক্ষেত্রে সন্দেহ রয়েছে। রানাঘাট মহাকুমার শাসক জানিয়েছেন, সমস্ত প্রাপকদের চিহ্নিত করতে আরও তদন্ত চালাতে হবে। 

সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রকৃত উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়াই মূল উদ্দেশ্য। তবে এই ধরনের অনিয়ম প্রকল্পগুলির গ্রহণযোগ্যতাকে আরো নিচের দিকে নামিয়ে দিচ্ছে। প্রশাসনের এই তদন্ত এবং কঠোর পদক্ষেপ প্রকল্পের স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে কতটা ভূমিকা নেবে, তা এখন সময়ই বলে দেবে।

Leave a Comment