কৃষক বন্ধু প্রকল্প নিয়ে সম্প্রতি একটি অভিযোগ উঠে এসেছে। যেখানে জানা যাচ্ছে যে, রাজ্য সরকারের জনহিতকর প্রকল্প কৃষক বন্ধুর টাকা ঢুকে যাচ্ছে নাবালকদের একাউন্টে অথচ শয়ে শয়ে কৃষক বঞ্চিত হচ্ছেন রাজ্যে।
কৃষক বন্ধু প্রকল্পের পিছনে রয়েছে এক সক্রিয় দালাল চক্র, এছাড়া এই প্রকল্প নিয়ে নানান রকম জালিয়াতিও চলছে কিন্তু এই দুর্নীতির কোন খবর প্রশাসনের কাছে নেই। দুর্নীতির খবর তৃণমূলের কাছে আসতেই তৃণমূলের দাবি, প্রশাসনের মধ্যে বিজেপির যে লোকেরা আছেন তারাই এসব করছেন। অন্যদিকে বিজেপির অভিযোগ সম্পূর্ণ দুর্নীতিটাই হচ্ছে তৃণমূলের মদতে।
মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর, যেখানে বন্যার ত্রাণ থেকে শুরু করে বিভিন্নরকম সরকারি প্রকল্পের টাকা দালাল চক্রের মাধ্যমে একাধিক ভুয়ো একাউন্টে চলে যাচ্ছে। এইবার সেখানে হরিশ্চন্দ্রপুর দুই নম্বর ব্লকের তেলজান্না সুইস গেট এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষক , কৃষক বন্ধুরা টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন,অথচ এই টাকা নাকি পৌঁছে গেছে নাবালকের একাউন্টে।
নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি থাকা সত্ত্বেও তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকে নি। এরপর স্থানীয় সিএসপিতে গিয়ে তারা জানতে পারেন যে, তাদের টাকাগুলো ঢুকে গেছে নাবালকদের একাউন্টে। একজনের কাছেই রয়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টি একাউন্ট এবং সেই অ্যাকাউন্ট গুলির মাধ্যমেই চলছে দুর্নীতি, একই পরিবারের ৫ থেকে ৬ জন নাবালকের একাউন্টে ঢুকে গেছে টাকা।
বিহারের মানুষের অ্যাকাউন্টে ও আবার বাংলার কৃষকদের টাকা ঢুকে যাচ্ছে! কিন্তু কিভাবে এই জালিয়াতি সম্ভব হচ্ছে, প্রশাসনিক আধিকারিকরা এই ক্ষেত্রে বলছেন যে, কৃষকরা তাদের কাছে কোন লিখিত অভিযোগ করেনি লিখিত অভিযোগ করলে তারা তদন্ত শুরু করবেন।
অন্যদিকে এই নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে, বিজেপি তৃণমূলকে দোষ দিচ্ছে, তো তৃণমূল দুষছে বিজেপিকে। তৃণমূল বলছে, ব্যালট ভোটের বেশিরভাগ টাই পাচ্ছে বিজেপি অর্থাৎ প্রশাসনে বসে থাকা বিজেপির লোকের মদতেই এটা হচ্ছে।
অন্যদিকে বিজেপি বলছে, তৃণমূলের কাটমানি সংস্কৃতি তো নতুন কিছু নয়। খোদ মুখ্যমন্ত্রী এই কথা বলেছেন। তাদের দাবি, এই কাটমানি খেয়ে খেয়েই ব্লক জেলা থেকে শুরু করে রাজ্য পর্যন্ত তৃণমূল নেতারা সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে ফেলছে।
আরো পড়ুন: ৫০০ বা ১০০০ টাকা না! রাজ্যের বেকাররা ২৫০০ টাকা প্রতি মাসে পাবে, এই প্রকল্পে আবেদন করলেই
বিডিও এই প্রসঙ্গে বলেছেন যে,“কোনো কৃষক আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত অভিযোগ জানান নি, যদি এরকম ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে আমাদের কাছে অবশ্যই এসে অভিযোগ জানান।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সকল অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন, তিনি বলেছেন একটা বিক্ষোভের পরিস্থিতির সৃষ্টি করবার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এরকম সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী দাবি করেছেন যে, “এই সংবাদটি ভুল। কোন এক সি এস পি কর্মী এই সংবাদটি করিয়েছেন। আমরা বিডিও কে জানিয়েছি তাকে দিয়ে তদন্ত করায়। সি এস পি কর্মী এই সংবাদ বলে বিক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি করেন।ওই এলাকায় সমস্ত কৃষক তাদের অ্যাকাউন্টেই টাকা পেয়েছেন।কোন নাবালকের অ্যাকাউন্টে নেই তদন্তে জানা গিয়েছে।”