বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থা কি একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে? সদ্য নিয়োগে দুর্নীতির ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসির গোটা প্যানেলটাই বাতিল করে দিয়েছে। ফলে চাকরি হারিয়েছে ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি কর্মী।
সেই ধাক্কার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ২০১৭ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। ওই টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও এক জটিলতা দেখা দিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার যা গতিপ্রকৃতি তাতে ২০১৭ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে যারা চাকরি পেয়েছেন তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে তা নিয়ে এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।
২০১৭ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় একটা-দুটো নয়, একেবারে ২১ টা ভুল প্রশ্ন থাকার অভিযোগে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ কলকাতা হাইকোর্টের মামলা দায়ের করে। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতির রাজাশেখর মান্থা। শুনানিতে প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে জানা গিয়েছে, ২১ টি প্রশ্ন ভুল আসার অভিযোগের প্রাথমিক সার্বত্তা আছে।
বিষয়টা খোলসা করে বলা যাক। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ মামলা দায়ের করে জানান, ২০১৭ সালের প্রাথমিকের টেট পরীক্ষায় ২১ টি প্রশ্ন ভুল ছিল। তাঁরা এই ভুল প্রশ্নগুলোয় সম্পূর্ণ নম্বর দেওয়ার দাবি তোলেন।
আরো পড়ুনঃ ২৫,৭৫৩ চাকরি বাতিলের পর এবার ৭০,০০০ প্রাইমারি চাকরি বিপদে
এরপরে বিচারপতি মান্থা বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে প্রশ্নপত্রে আদৌ ভুল কিছু ছিল কিনা সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। তবে সূত্রের খবর, ভুল প্রশ্নের সংখ্যা দু-চারটে এদিক ওদিক হলেও ওই পরীক্ষায় যে বেশ কিছু প্রশ্ন গোলমেলে ছিল তা বেশিরভাগ পরীক্ষার্থীই টের পেয়েছিলেন।
তবে শুধু বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েই থেমে থাকেননি বিচারপতি মান্থা। তিনি জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্রে যদি সত্যিই ভুল থেকে থাকে তবে ভুল প্রশ্ন পিছু পূর্ণ নম্বর টেট পরীক্ষার্থীদের দিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে।
এই বিষয়টি আর ভাল করে খতিয়ে দেখার জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দিয়েছেন বিচারপতি। শেষ পর্যন্ত যদি প্রশ্নপত্রে ভুল বেরোয় এবং বিচারপতির এই নির্দেশ কার্যকরী হয় তবে ২০১৭ সালের প্রাথমিকে টেট পরীক্ষার ভিত্তিতে যে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে সেখানেও মেধা তালিকায় ব্যাপক পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা থাকছে।
আরো পড়ুনঃ এইভাবে মানুষ ঠকানো আর চলবে না! ব্যাঙ্কগুলিকে সাফ জানিয়ে দিল RBI
সে ক্ষেত্রে আবারও বেশ কিছু শিক্ষকের চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হতে পারে। এই বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য মাত্র একদিন সময় দিয়েছেন বিচারপতি। পাশাপাশি এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ১১ জুন।