সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্ট যে সিদ্ধান্তে সিবিআইকে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি আধিকারিকদের ভূমিকার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল, তা স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট বর্তমানে নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্তে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। সোমবার শুনানির সময়, বেঞ্চ বলেছে যে আমরা কলকাতা হাইকোর্টের সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখছি, যেখানে সিবিআইকে রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
25,753 শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায়ের কোন অংশে স্থগিতাদেশ
রাজ্য সরকারের তরফে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্ট। অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা মানেই নাকি দুর্নীতি। সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায়ের এই অংশে আপাতত স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সোমবার এর শুনানি হবে।
পরবর্তী শুনানি হবে ৬ মে
প্রায় 26,000 শিক্ষক নিয়োগ বাতিল নিয়ে হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছেছে রাজ্যের এসএসসি দফতর। বাংলা সরকারের স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) দ্বারা রাজ্য-চালিত এবং রাজ্য-সহায়তাপ্রাপ্ত স্কুলগুলিতে 25,753 জন শিক্ষক এবং অ-শিক্ষক কর্মীদের নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হাইকোর্ট। সেটাই মানতে চাননি মমতা সরকার।
আরো পড়ুনঃ মাসে ৭,৫০০ টাকা দেওয়ার কথা ছিল! কিন্তু লক্ষ্মীর ভান্ডারে মিলছে ১০০০ টাকা
এবার এদিন সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেই আবেদনেরই শুনানি করেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বেঞ্চ। বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রও। বেঞ্চে এবার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ৬ মে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কী বলেছেন?
2016-এর সব নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশ দিতে এক প্রকার নাকি বাধ্য হয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলেছেন, আসল ওএমআর শিট নষ্ট। যোগ্য-অযোগ্য আলাদা করার উপায় নেই। আদালতের কাছে তাই অন্য উপায় ছিল না, সকলের চাকরি বাতিল করা ছাড়া। প্যানেলে নাম নেই, তাও চাকরি করার বিষয়টি হল বিশাল দুর্নীতি। সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন কীভাবে নিয়োগ হয়েছিল? সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, দুর্নাীতি করে সুবিধা নিচ্ছেন কারা, মূলচক্রী কারা, কারা আদতে লাভবান হলেন সবটা খুঁজে বের করতেই হবে।
নিয়োগ বাতিলে সুদসহ বেতন ফেরত দিতে হবে?
এসএসসি প্যানেলে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের বেতন দেওয়া হয়েছে জনগণের টাকায়। চার সপ্তাহের মধ্যে তাই সবাইকে সুদসহ বেতন ফেরত দেওয়ার কথা জানিয়েছে হাইকোর্ট। প্রত্যেককে বার্ষিক ১২ শতাংশ সুদে টাকা ফেরত দিতে হবে। নতুন প্রার্থীরা চাকরি পাবেন। ১৫ দিনের মধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আরো পড়ুনঃ রাজ্যে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে! এর মধ্যেই সুখবর শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন- হাইকোর্টের রায় বেআইনি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন আমরা তাঁদের পাশে আছি। বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির বিরুদ্ধে শাসক দল বিচার বিভাগের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন।