আজ এমন একটা জীবন বিমা প্রকল্পের কথা আপনাদের জানাব যেটা প্রিমিয়াম না দিয়েই আপনি পেয়ে যেতে পারেন। শুধু চাকরি করলেই এই জীবন বিমার অর্থ পেয়ে যাবেন আপনার নমিনি। আসুন সেই সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
কোনওরকম প্রিমিয়াম না দিয়েই পেয়ে যান জীবন বিমার ৭ লক্ষ টাকা কভারেজ! এক্ষেত্রে পরিষ্কার বলার, প্রিমিয়াম না মানে না। অর্থাৎ আপনাকে একটা টাকাও খরচ করতে হবে না। কিন্তু এই বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করলে বিপদের সময় আপনার পরিবার হাতে পাবে ৭ লক্ষ টাকা। অবশ্য এর জন্য EPFO-তে নাম থাকতে হবে আপনার। মানে সক্রিয় EPF আকাউন্ট থাকতে হবে। আর তার জন্য হতে হবে সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার বেতনভুক কর্মচারী।
এমপ্লয়ি প্রভিডেন্ট ফান্ড বা EPF-এর কথা অনেকেই জানেন। বহু সরকারি-বেসরকারি কর্মচারী এই ইপিএফে টাকা রাখেন। আবার যারা চাকরি করেন না তাঁরাও ভবিষ্যৎ জীবনের কথা ভেবে প্রভিডেন্ট ফান্ড বা PF-এ অর্থ সঞ্চয় করেন। এক্ষেত্রে লক্ষ্যই হল সন্তানের উচ্চশিক্ষা, ভবিষ্যতে কোনও বিপদ আসলে তা সামলানো বা কর্মজীবন শেষের পর দুশ্চিন্তা এড়াতে মানুষ একটু একটু করে EPF বা PF-এ অর্থ সঞ্চয় করতে শুরু করে।
এখানে বছরে সর্বোচ্চ দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থ সঞ্চয় করার সম্ভব এবং এই গোটা বিষয়টিতে কর ছাড় পাওয়া যায়। কিন্তু পিএফ সম্বন্ধে জানলেও অনেকে তার মূল ব্যবস্থা EPFO সম্বন্ধে সঠিকভাবে অবগত নন। আর সেখানেই কিন্তু লুকিয়ে আছে বিনা প্রিমিয়ামে বিপদে ৭ লক্ষ টাকা কভারেজ পাওয়ার বিষয়টি।
আরো পড়ুনঃ ১ মে থেকে এই ৫ টি নিয়ম বদলে গেল, না জানলে আজ নাহয় কাল পস্তাবেন
EPFO-এর তিনটি প্রধান স্কিম আছে। একটি EPF আর অপর একটি EPS বা এমপ্লয়ি পেনশন স্কিম। তৃতীয়টি হল EDLI বা Employee Deposit Link Insurance Scheme. এই তৃতীয় প্রকল্পের মাধ্যমেই আপনি বিনা প্রিমিয়ামে বিমার কভারেজটি পেতে পারেন।
সরকারি হোক বা বেসরকারি সংস্থা কর্মচারীদের বেতন থেকে একটা অংশ কেটে নিয়ে EPF-এ জমা করা হয়। এর উদ্দেশ্যই হল ওই কর্মচারীর ভবিষ্যৎ তহবিল গঠন। এতে কর্মচারীর বেতনের যেমন একটি অংশ কাটা হয় তেমনই সংশ্লিষ্ট সংস্থাও নিজে থেকে সমপরিমাণ অর্থ জমা করে থাকে। এবার যাদের EPF কাটা হয় তাঁদের সকলেরই নাম বিনা খরচে EDLI-তে নথিভুক্ত করা যায়। এর জন্য পরেও কোনও অর্থ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এটি বিমা হলেও কর্মচারীদের এর জন্য কোনও প্রিমিয়াম দিতে হয় না। হঠাৎ যদি আপনার মৃত্যু হয় তবে আপনার পরিবারকে ৭ লক্ষ টাকা কভারেজ দেওয়া হবে।
কীভাবে এই কভারেজের সুবিধে পাবেন?
যেকোনও সংস্থায় কর্মচারী হিসেবে চাকরি করলেই EDLI স্কিমের সুবিধে পাওয়া যাবে। এমনকি পরবর্তীতে কোম্পানি বদল করলেও এই সুবিধে উপলব্ধ থাকবে। তবে এর সুবিধে পেতে হলে একটি কোম্পানিতে আপনাকে ন্যূনতম পক্ষে ১ বছর টানা কাজ করতে হবে। এক বছরে আপনি গড়ে যত টাকা বেতন পান তার ৩৫ গুণ অর্থ EDLI কভারেজ হিসেবে বিপদের সময় আপনার পরিবার পেতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গড় বেতনের সীমা ১৫,০০০ টাকা ধরা হয়। সেই হিসেবে আপনার পরিবারের প্রাপ্য অর্থ দাঁড়ায় ৫.২৫ লক্ষ টাকা। এক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী আপনি যে সংস্থায় কাজ করেন তারা এই কভারেজের উপর বোনাস হিসেবে ১.৭৫ লক্ষ টাকা দেবে। সব মিলিয়ে মোট হিসেবটা গিয়ে দাঁড়াবে ৭ লক্ষ টাকায়।
আরো পড়ুনঃ এখন যেকেউ বীমা (Insurance) করাতে পারবে! এই নিয়ে নতুন নিয়ম চালু করল সরকার
এই প্রকল্পের সুবিধে পাওয়ার জন্য EDLI প্রকল্পে সবার আগে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। এছাড়া যদি বিপদ ঘটেই যায় তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পরিবারের সদস্যদের তাঁর মৃত্যু শংসাপত্র, সম্পত্তির উইল ইত্যাদি নিয়ে কর্মচারী ভবিষ্যৎ নিধি প্রকল্পের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে কথা বলুন।
তবে আপনি যদি চাকরি ছেড়ে দেন বা আর কর্মরত না থাকেন সেক্ষেত্রে এই বিমার সুবিধা পাবেন না। এমনকি অবসরের পরও এই বিমার সুবিধা পাওয়া যায় না।