বাংলা আবাস যোজনা (Bangla Awas Yojana) প্রকল্পের টাকা ছয়টি আদিবাসী পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাওয়ার পরেও তারা সেই টাকা ব্যবহার করতে পারছে না। কিন্তু কেন? আসলে নিজস্ব জমির কোন বৈধ কাগজপত্র নেই তাদের কাছে।
তাই সরকারি প্রকল্পের টাকা পাওয়া সত্বেও তারা বাড়ি বানাতে পারছে না। আর এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রামে।
টাকা ঢুকেছে, কিন্তু ঘর তৈরি হচ্ছে না
রসিয়াড়ি গ্রামের এগারটি আদিবাসী পরিবার বছরের পর বছর ধরে জঙ্গলের ধারে বসবাস করছেন। তাদের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, বিদ্যুৎ সংযোগ সবই রয়েছে। কিন্তু তাদের নিজেদের নামে জমির কোন পাট্টা নেই।
এদিকে বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা ইতিমধ্যে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে। কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জমির বৈধ কাগজপত্র ছাড়া তারা এই টাকা তুলতে পারবেন না। তাই টাকা তাদের ব্যাংকে থাকলেও কোনো কাজে লাগবেনা।
বনদপ্তরের জমি হওয়ায় আটকে রয়েছে আবাস যোজনার ঘর
এই পরিবারগুলির আক্ষেপের মূল কারণ হল, তাদের বসবাসের জায়গাটি বনদপ্তরের অধীনে। ফলে সরকারিভাবে এই জায়গায়কে নিজস্ব জমি বলে তারা স্বীকৃতি দিতে পারছে না। আর পাট্টা না থাকলে সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পের ঘরও তৈরি করা যাবে না।
এক উপভোক্তা বলেছেন, “টাকা ঢুকেছে। কিন্তু তুলতে পারিনি। বলেছে টাকা তুলতে গেলে জমির পাট্টা লাগবে। আমরা প্রায় ১৬ বছর ধরে এখানে রয়েছি। কিন্তু এখনো জমির কোনরকম বৈধ কাগজপত্র পাইনি।”
এই সমস্যা সমাধান কবে মিলবে?
এই সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গে প্রশাসনের তরফ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা রয়েছে। চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের বিডিও জানিয়েছেন, “১১ জনের মধ্যে ৬ জনের নাম আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকা রয়েছে। কিন্তু যেহেতু তাদের বনদপ্তরের জমির পাট্টা নেই, তাই টাকা হোল্ড করে রাখা হয়েছে। আমরা এই সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছি।”
স্থানীয় প্রশাসন দাবী করছে, “পরিবারগুলিকে সরকারিভাবে জমির পাট্টা দেওয়ার জন্য কাজ চলছে। একবার এই সমস্যা মিটে গেলে তারা সরকারি আবাস যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পাবেন।”
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে ৩০০০ টাকা, বিনামূল্যে বিদ্যুৎ! BJP ক্ষমতায় আসলে কী কী দেবে দেখুন
তাহলে কবে মিলবে ঘর?
এই মুহূর্তে পরিবারগুলির মনে একটিই প্রশ্ন যে, কবে তারা নিজেদের জমির পাট্টা পাবেন এবং আবাস যোজনা প্রকল্পের ঘর তৈরি করতে পারবেন। কারণ যতদিন না এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে, ততদিন সরকারি টাকা পেয়েও বাড়ি তৈরি করতে পারবে না।
এখন দেখার প্রশাসনের আশ্বাস কতটা বাস্তবে কার্যকর হয় এবং কবে এই ৬টি পরিবার নিজেদের স্বপ্নের বাড়ি গড়ে তুলতে পারে।