অনেক মানুষ ভাবছেন, একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে কী হবে? আপনাদের তাহলে এটি জানাও গুরুত্বপূর্ণ যে একটি অ্যাকাউন্ট এমনি এমনি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় না। এটি নিষ্ক্রিয় এবং পুনরায় সক্রিয় করার জন্য নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে৷
একটি নিষ্ক্রিয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট কী?
দীর্ঘ সময়ের জন্য কোনো লেনদেন না হলে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় বলে ধরে নেওয়া হয়। সাধারণত, যদি একটি অ্যাকাউন্টে দুই বছরের বেশি সময় ধরে, কোনও লেনদেন না হয়ে থাকে, তাহলে সেটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে। এটি সেভিংস এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্ট উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হলে কী হয়?
যখন একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় করা হয়, এর অর্থ এই নয় যে গ্রাহক তাঁদের টাকাও হারিয়ে ফেলবেন। টাকা অ্যাকাউন্টেই থাকে, তবে কিছু বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হয়। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাকাউন্টটি পুনরায় সক্রিয় না হওয়া পর্যন্ত ডেবিট লেনদেনগুলি ব্লক করা হল৷ তবে, নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় না।
তাই গ্রাহকরা তখনও তাঁদের অর্থ পুনরুদ্ধার করতে পারবেন। তবে, টানা দশ বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পরে, অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স একটি ‘দাবীবিহীন আমানত’ হিসাবে ধরে নেয় ব্যাঙ্ক। এই সময়, গ্রাহকের টাকা শিক্ষা ও সচেতনতা তহবিলে স্থানান্তরিত হয়, এটি ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক দেখে নেয়।
অ্যাকাউন্ট দশ বছরের বেশি সময় ধরে নিষ্ক্রিয় থাকার পরেও গ্রাহকরা যে কোনও সময় তাঁদের টাকা দাবি করতে পারেন, এবং অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় থাকলেও ব্যাঙ্ক এই পরিমাণে সুদ দিতেই থাকবে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নিয়ম অনুসারে, সক্রিয় এবং নিষ্ক্রিয় উভয় অ্যাকাউন্টেই সুদ দেওয়া হয়। সুতরাং, আপনি লেনদেন না করলেও, আপনার সেভিংস সুদ পাবেই।
একটি নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করবেন এইভাবে
আপনি যদি একটি নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টের পুনরায় সক্রিয় করবেন ভাবেন, তা তুলনামূলকভাবে সহজ। এটি কীভাবে করবেন তা জানুন-
1. আপনার ব্যাঙ্কের শাখায় যান: প্রথম ধাপ হল ব্যাঙ্কের শাখায় যাওয়া, যেখানে আপনার অ্যাকাউন্ট রয়েছে৷
2. KYC নথি জমা দিন: আপনাকে নো ইওর কাস্টোমার (KYC) নথি প্রদান করতে হবে। এর মধ্যে সাধারণত শনাক্তকরণ প্রমাণ, ঠিকানার প্রমাণ এবং সম্ভবত অন্যান্য নথি অন্তর্ভুক্ত থাকবে, যা ব্যাঙ্কের প্রয়োজন।
3. পুনরায় সক্রিয় করার জন্য আবেদন: আপনার কেওয়াইসি নথিগুলির সাথে, আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করার অনুরোধ করে একটি আবেদন জমা দিতে হবে।
4. যাচাইকরণ প্রক্রিয়া: ব্যাঙ্ক আপনার জমা দেওয়া নথি রিভিউ করবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, তারা আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করার জন্য এগিয়ে যাবে।
5. বিজ্ঞপ্তি: একবার আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় হয়ে গেলে, ব্যাঙ্ক আপনাকে SMS বা ইমেলের মাধ্যমে সব জানাবে। পুনরায় সক্রিয় করার প্রক্রিয়াটি সাধারণত প্রায় তিন দিন সময় নেয়।
সংক্ষেপে, লেনদেনের অভাবের কারণে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে, এর অর্থ এই নয় যে টাকা জলে যাবে। নিষ্ক্রিয় অ্যাকাউন্টগুলি ব্যাঙ্ক নিজেই রক্ষণাবেক্ষণ করে, গ্রাহকদের যে কোনও সময় তাঁদের টাকা পুনরুদ্ধার করতে দেয়। তাই আপনিও যদি আপনার অ্যাকাউন্ট পুনরায় সক্রিয় করতে চান তবে আপনাকে কেবল আপনার ব্যাঙ্কে যেতে হবে, প্রয়োজনীয় নথিগুলি সরবরাহ করতে হবে এবং এর সঙ্গে একটি আবেদন জমা দিলেই হবে।