ভারতে স্প্যাম কলের সমস্যা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন অসংখ্য ভুয়ো কল এবং প্রতারণামূলক ফোনের শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। আর এবার এই সমস্যা সমাধান করার জন্য টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (TRAI) গুরুত্বপূর্ণ এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এখন থেকে এয়ারটেল, জিও এবং ভোডাফোন আইডিআর গ্রাহকরা কল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলারের নাম দেখতে পাবে। অর্থাৎ, কল রিসিভ করার আগেই আপনি জানতে পারবেন যে, কে আপনাকে ফোন করেছে।
বেশ কিছু সংবাদসংস্থার তরফ থেকে জানা যাচ্ছে, TRAI Caller Name Presentation (CNAP Service) নামের এই নতুন ফিচার চালু করেছে, যা Truecaller অ্যাপের মতই কাজ করবে এবং কলারের নাম দেখাবে। এটা টেলিকম সংস্থাগুলির কেওয়াইসি তথ্য ব্যবহার করে তাদের নাম প্রদর্শন করবে। ফলে স্প্যাম কল নিয়ন্ত্রণ করা খুবই সহজ হয়ে যাবে।
CNAP কী এবং কীভাবে কাজ করবে?
CNAP হল একটি সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস, যা কলারের নাম প্রদর্শন করবে। বর্তমান সময়ে Truecaller-এর মত অ্যাপগুলি ব্যবহারকারীদের অনুমতি নিয়ে ডেটাবেস তৈরি করে এবং সেই নাম প্রদর্শন করে।
কিন্তু এই নতুন ফিচার কোনরকম তৃতীয় পক্ষের তথ্যের উপর নির্ভর করবে না। বরং টেলিকম সংস্থাগুলির কাছে সংরক্ষিত গ্রাহকদের নথির উপর ভিত্তি করে তাদের নাম দেখাবে। যার ফলে ব্যবহারকারীরা প্রতারণামূলক কল সহজেই চিনতে পারবে।
TRAI-এর নতুন সিদ্ধান্ত
TRAI গত ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাস CNAP পরিষেবা চালু করার সুপারিশ দিয়েছিল। তবে এই পরিষেবা চালু করতে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা দেখা দেয়। কারণ 2G নেটওয়ার্কে এই প্রযুক্তি সাপোর্ট করানো সত্যিই খুব কঠিন। তবে এয়ারটেল, জিও, ভোডাফোন আইডিয়া ইতিমধ্যেই HP, Dell, Ericsson ও Nokia-এর মত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি সেরেছে। ফলে এই নতুন ফিচার খুব তাড়াতাড়ি কার্যকর করা হচ্ছে।
স্প্যাম কল বন্ধে পদক্ষেপ
CNAP পরিষেবা ছাড়াও DoT টেলিকম সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দিয়েছে, +৯১ কোড ছাড়া অন্যান্য আন্তর্জাতিক নাম্বারগুলিকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করতে হবে, যাতে বিদেশ থেকে আসা প্রতারণামূলক কল গ্রাহকরা আগে থেকেই বুঝতে পারে।
এয়ারটেল ইতিমধ্যেই এই ফিচার লঞ্চ করে দিয়েছে। অন্যদিকে BSNL ও Vodafone Idea ইতোমধ্যে AI ভিত্তিক নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি চালু করেছে, যা স্বয়ংক্রিয় হবে ফেক কল এবং মেসেজ বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক 2025-র ফলাফল কবে প্রকাশিত হবে? দিনক্ষণ জানালো বোর্ড
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
TRAI-এর এই নতুন CNAP ফিচার চালু হলে স্প্যাম কল এবং প্রতারণামূলক কল বন্ধ হবে তা বলা যায়। যদিও 2G নেটওয়ার্কে কিছু সীমাবদ্ধতা দেখা যাচ্ছে। তবে টেলিকম কোম্পানিগুলি আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করার কাজ করছে। যদি এটি সফলভাবে কার্যকর হয়, তাহলে ভারতীয় গ্রাহকদের জন্য দারুণ পদক্ষেপ হতে চলেছে।