কলকাতা সহ গোটা শহরতলীতে একের পর এক নারী নির্যাতনের ঘটনা সামনে এসেছে। এবার সেই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিশেষ করে রাতে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। সেই প্রসঙ্গে এবার রাজ্য সরকারকে কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
সম্প্রতি একটি জনস্বার্থ মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চ রাতে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য সরকারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করেছে।
কী বলেছে হাইকোর্ট?
কলকাতা শহরের তথ্য প্রযুক্তি সংস্থাগুলি সহ বিভিন্ন অফিসের কর্মরত মহিলাদের অনেক সময় নাইট ডিউটি দেওয়া হয়। রাত করে বাড়ি ফেরার সময় অনেকের মধ্যেই নিরাপত্তাহীনতার ভয় দেখা যায়। একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের নারী সুরক্ষা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন উঠেছে। তাই মহিলাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরকে একটি বিশেষ টিম গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে।
এই টিমের প্রধান কাজ হবে-
- শহরের কোথায় কোথায় নিরাপত্তার অভাব রয়েছে সেগুলিকে চিহ্নিত করা,
- মহিলাদের জন্য সুরক্ষা ব্যবস্থা আরো উন্নত করতে কি কি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন সেগুলোর পরিকল্পনা করা,
- প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছ থেকে একটি নিরাপত্তার রিপোর্ট জমা দেওয়া।
‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্প কি যথেষ্ট?
কলকাতা হাইকোর্টের এই মামলার শুনানিতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, ‘রাত্তিরের সাথী’ প্রকল্পের মাধ্যমে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় রাতে পুলিশ টহলদারি চালানো হবে। তবে মামলাকারীরা জানিয়েছেন, এই ব্যবস্থাগুলিও যথেষ্ট নয়। আরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা দরকার।
নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কী হবে?
- শহর এবং শহরতলির নির্দিষ্ট এলাকাগুলিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হতে পারে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে।
- নাইট শিফটে কর্মকর্তা মহিলাদের জন্য বিশেষ হেল্পলাইন নাম্বার চালু করা হতে পারে।
- মহিলাদের জন্য নাইট ক্যাব সার্ভিস বা নিরাপত্তাবেষ্টিত কোন পরিবহন পরিষেবার চালু করার ব্যবস্থা করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: ৫০০ টাকার নোটে তারকা চিহ্ন মানেই জাল? RBI-এর নির্দেশিকা জেনে নিন এখনই
কর্মরত মহিলাদের মধ্যে আশার আলো
কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশনার ফলে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি এখন থেকে আরো গুরুত্ব পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সহজ জুড়ে যে সমস্ত জায়গায় মহিলাদের জন্য নিরাপত্তার ঘাটতি অনুভব করা যেত, তা চিহ্নিত করা এখন সহজ হবে। হাইকোর্টের এই পদক্ষেপে মহিলাদের জন্য বিশেষ স্বস্তির খবর।