রাজ্যের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের পরে প্রকল্প চালু করেছে। কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে লক্ষীর ভান্ডার, শিক্ষাশ্রী, সবই চলে আসছে। তবে এই তালিকাতেই রয়েছে এমন একটি বিশেষ প্রকল্প, যার কথা অনেকেই জানে না। হ্যাঁ আমরা বলছি রূপশ্রী প্রকল্পের (Rupashree Scheme) কথা।
আসলে এই প্রকল্পটির মাধ্যমে রাজ্য সরকার অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার সময় এককালীন ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেয়। অর্থের অভাবে অনেক সময় বিয়ের জন্য চাপ তৈরি করে পরিবার। আর সেই চাপ কমাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।
কী এই রূপশ্রী প্রকল্প?
মূলত ২০১৮ সালের ১ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই প্রকল্পটি চালু করেছিল। এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়েদেরকে সম্মানের সঙ্গে বিয়ে দেওয়া। তবে এটি কোনো ঋণ নয়, বরং সরকার একবারে সরাসরি মেয়েদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২৫,০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
কারা আবেদন করতে পারবে?
এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য অবশ্যই কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন—
- আবেদনকারীকে অবিবাহিত হতে হবে এবং প্রথমবার বিয়ে করতে হবে।
- কন্যার বয়স অবশ্যই ১৮ বছর এবং পাত্রের বয়স ২১ বছর হতে হবে।
- পরিবারের বার্ষিক আয় ১.৫ লক্ষ টাকার উপরে হওয়া যাবে না।
- আবেদনকারীকে অবশ্যই পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং কমপক্ষে পাঁচ বছর বসবাস করতে হবে।
- আবেদনকারীর নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে, যেখানে অনুদানের টাকা জমা পড়বে।
কী কী ডকুমেন্ট লাগবে?
এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে গেলে কিছু ডকুমেন্টও জমা দিতে হবে। সেগুলি হল—
- পরিবারের বার্ষিক আয়ের সার্টিফিকেট,
- আবেদনকারীর জন্ম সার্টিফিকেট,
- পাত্রের বয়সের প্রমাণপত্র,
- বিয়ের প্রমাণপত্র,
- আবেদনকারী এবং পাত্রের রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ছবি,
- নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের প্রথম পাতার জেরক্স,
- অবিবাহিত থাকার ঘোষণা পত্র।
আরও পড়ুন: দুয়ারে সরকারের পর এবার “আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান!” কী কী সুবিধা মিলবে দেখে নিন
আবেদন করবেন কীভাবে?
এই প্রকল্পে আপনার এলাকা অনুযায়ী যেকোনো অফিসে গিয়ে আবেদন করতে পারেন। গ্রামীণ এলাকা হলে ব্লক অফিসে গিয়ে আবেদন করতে হবে। পাশাপাশি শহর অঞ্চল হলে এসডিও অফিস বা পৌরসভার কমিশনারের কাছে আবেদন করতে পারেন। আর বিয়ের এক থেকে দুই মাস আগে এই প্রকল্পে আবেদন করা যেতে পারে। মূলত বিয়ের চার-পাঁচ দিন আগে কন্যার অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়ে যায়।