দেশজুড়ে একদিকে CAA ও NRC নিয়ে বিতর্ক, আর তারই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে শুরু হতে চলেছে স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন ২০২৫ (Special Intensive Revision 2025) অর্থাৎ, ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়া। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আগামী আগস্ট মাস থেকেই রাজ্য জুড়ে BLO-দের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। আর এই সংশোধনের বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে বহু ভোটারের উপর। বিশেষ করে যাদের এখনো পর্যন্ত ডকুমেন্ট ঠিক নেই।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সংশোধন প্রক্রিয়া?
সম্প্রতি বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় লক্ষ লক্ষ নাম বাদ পড়েছে। আর এবার পশ্চিমবঙ্গে এমনই সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে। সূত্র বলছে, পশ্চিমবঙ্গে এই সংখ্যাটা বিহারের থেকেও বেশি হতে পারে। কারণ অনেকের কাছে এখনো পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট নেই। আর অনেকে বহু বছর আগে ঠিকানা পরিবর্তন করছে বা পরিবার সূত্রে নাম ঢুকিয়েছে, কিন্তু যথাযথ প্রমাণ নেই।
ভোটার তালিকায় নাম রাখতে কোন কোন ডকুমেন্ট লাগবে?
নির্বাচন কমিশন এবার মোট ১১টি সরকারি ডকুমেন্টকে গ্রহণযোগ্য বলেই চিহ্নিত করেছে। যেকোনো একটি ডকুমেন্ট জমা দিলেই হবে। সেগুলি হল—
- সরকার বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ফটো আইডি বা পেনশন পেমেন্টের অর্ডার।
- পোস্ট অফিস, ব্যাংক বা এলআইসি-এর আইডি।
- সরকারি বা পৌরসভা অনুমোদিত জন্ম সার্টিফিকেট।
- বৈধ পাসপোর্ট।
- স্বীকৃত বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট।
- এনআরসি সংক্রান্ত বৈধ নথি।
- জাতিগত শংসাপত্র।
- সরকার অনুমতিতে স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র।
- জমি বা বাড়ির দলিল।
- পারিবারিক রেজিস্টার।
জন্ম তারিখ অনুযায়ী নথির প্রয়োজনীয়তা
নির্বাচন কমিশন এবার জন্ম সালের ভিত্তিতে তিনটি ভাগে ডকুমেন্ট নির্ধারণ করেছে। প্রথমত, যদি ১ জুলাই, ১৯৮৭-র আগে জন্ম হয়, তাহলে কেবল একটি নথি জমা দিলেই হবে। আর ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও চলবে।
দ্বিতীয়ত, যদি ১ জুলাই, ১৯৮৭ থেকে ১ জানুয়ারি, ২০০২-এর মধ্যে জন্ম হয়, তাহলে নিজের জন্য একটি নথি এবং বাবা-মায়ের জন্য আরো একটি নথি জমা দিতে হবে। তৃতীয়ত, যদি ১ জানুয়ারি, ২০০২-এর পরে জন্ম হয়, তাহলে নিজের জন্য একটি নথি, আর বাবা-মায়ের উভয়ের একটি করে নথি জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: আগস্টে ২০ তম কিস্তির কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে! পিএম কিষান নিয়ে বড় আপডেট
বাদ পড়বেন কারা?
ইতিমধ্যে বিহারে একাধিক মৃত বা নাম না থাকা অন্য রাজ্যের নাগরিকদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও একই রকম কাজ চলবে বলে জানা যাচ্ছে। যাদের কাছে উপযুক্ত পরিচয় পত্র নেই, যাদের ঠিকানা বা বয়সের প্রমাণপত্র নেই, কিংবা যারা আগে ভোটার ছিলেন না, তাদের নাম এই তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে।
তাই অবশ্যই নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট প্রস্তুত করে রাখুন। কারণ বিএলও যখন আপনার বাড়িতে আসবে, তখন সঠিক তথ্যগুলো জমা দিতে হবে। কোনো বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আবেদন করবেন না এবং প্রয়োজনে স্থানীয় নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।