স্বর্ণ ঋণ বা গোল্ড লোন (Gold Loan) নিয়ে দেশজুড়ে বিপুল জ্বালিয়াতি চলছে। বেশ কিছুদিন ধরে সমীক্ষা চালানোর পর এর হদিস পেয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI)। তারা জানিয়েছে, বেশকিছু ব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থা (NBFC) গোল্ড লোন দেওয়ার ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের প্রতারিত করে আসছে।
নিয়ম অনুযায়ী সোনা বন্ধক রেখে গ্রাহকদের যত টাকা ঋণ পাওয়ার কথা সেটা তো দিচ্ছেই না, এমনকি জালিয়াতি করে সোনার মূল্য কমিয়ে দেখানো হচ্ছে। তার উপর গোল্ড লোনের সুদের হার নিয়েও চরম নৈরাজ্য চলছে। এমন পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় নড়েচড়ে বসেছে RBI.
দেশে গোল্ড লোনের চাহিদা ক্রমশই বাড়ছে। কারণ মোটা টাকার ঋণ নিতে হলে কোনও কিছু বন্ধক বা মর্টগেজ রাখার কথা বলে ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্ক নয় এমন (NBFC) আর্থিক সংস্থাগুলো। ঠিক সেই জায়গাতেই গোল্ড লোনের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব এসে যায়।
সবচেয়ে বড় কথা, সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরবিআই-এর নিয়ম হল- যেদিন আপনি সোনা বন্ধক রাখছেন সেই দিনের বাজার দর অনুযায়ী ওই সোনার সর্বোচ্চ মূল্যের উপর গ্রাহক ঋণ পাবেন। পাশাপাশি সোনা বন্ধক থাকায় গোল্ড লোনে সুদের হার সাধারণত কিছুটা কম থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বহু গোল্ড লোন প্রদানকারী নাম করার বহু সংস্থা গ্রাহকদের বন্ধক রাখা সোনার উপর সর্বোচ্চ মূল্যের ঋণ দিচ্ছে না। গ্রাহক ২২ ক্যারেট সোনা বন্ধক রাখলে তাকে ভুল বুঝিয়ে সেটাকে ১৮ বা ২০ ক্যারেট দেখানো হচ্ছে।
স্বাভাবিকভাবেই বন্ধক রাখার সোনার মূল্যমান হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে গ্রাহক কম ঋণ পাচ্ছেন। তা ছাড়া ইচ্ছাকৃতভাবে সোনার গয়নায় খাদের পরিমাণ বেশি দেখিয়ে কম ঋণ দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আরকটা বড় প্রতারণা হচ্ছে গোল্ড লোনের সুদের হার নিয়ে।
সাধারণত ব্যাঙ্কগুলো গোল্ড লোনের ক্ষেত্রে ৮.৭৫ থেকে ১১ শতাংশ পর্যন্ত হারে সুদ নিয়ে থাকে। কিন্তু বেশ কিছু গল্ড লোন প্রদানকারী নামকরা সংস্থা গ্রাহকদের কাছ থেকে গোল্ড লোনের ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত সুদ আদায় করছে!
শুধু তাই নয় ব্যাংকগুলো গোল্ড লোনের জন্য প্রসেসিং ফি হিসেবে সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা নিলেও, গোল্ড লোন প্রদানকারী সংস্থাগুলি বহু ক্ষেত্রে তার থেকে অনেক বেশি টাকা গ্রাহকদের থেকে আদায় করে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়া গোল্ড লোন প্রদানকারী সংস্থাগুলির প্রতারণা নিয়ে সম্প্রতি একটি নির্দেশিকা জারি করেছে গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে। সেখানে প্রতিটি বিষয় সম্বন্ধে গ্রাহকদের সচেতন করে দেওয়ার পাশাপাশি জানিয়েছে, তুলল মূল্য বিচার করে তবেই যেন গ্রাহকরা ঋণ নেন। এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলো সাধারণত সঠিক অর্থ সঠিক সুদের হারে প্রদান করে বলে জানানো হয়েছে। এমনকি বেশ কিছু ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের বন্ধক রাখা সোনার গয়নার ক্ষেত্রে ক্যারেট সার্টিফিকেট প্রদান করে। এক্ষেত্রে গ্রাহকদের আর প্রতারিত হতে হয় না।
এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, সবকিছু বিচার বিবেচনা করে তবেই গোল্ড লোন নেওয়া উচিত। অনেকেই বলছেন, ব্যাঙ্ক থেকে গোল্ড লোন নিলে তা অনেক বেশি নিরাপদ হয়। তাছাড়া বন্ধক রাখা গয়নার উপর আগে থেকে হলমার্ক করিয়ে নিলে গোল্ড লোনের ক্ষেত্রে সঠিক পরিমাণ অর্থ পাওয়াটা সহজ হয়।
🔥 সরকারি সুবিধা, চাকরির সুবিধা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ন আপডেট মিস করতে না চাইলে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জয়েন হয়ে থাকুন।
🔥 এগুলিও পড়ুন 👇👇
👉 মাধ্যমিকের আগেই উচ্চ মাধ্যমিকের রেজাল্ট? মার্কশীট পাবে এতদিন পর
👉 ৬ মাসের জন্য টাকা তোলা বন্ধ! এই ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকলেই বিপদ
👉 ভোটের আগে ১৫,০০০ টাকা দিচ্ছে মোদী! এই কাগজপত্র নিয়ে আবেদন করুন
👉 রাজ্যে ভোটের মধ্যেই আবার সক্রিয় ইডি (ED), রেশন কার্ড নিয়েই যত প্রবলেম
👉 ব্যাঙ্কে ব্যাঙ্কে পড়ে রয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা, কারা পাবে সেই টাকা? চিন্তায় RBI
👉 এপ্রিলে ৫০০ ধরনের ওষুধের দাম বাড়ছে, কিন্তু সরকার বলছে অন্য কথা