রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য একটি দারুন সুখবর সামনে এসেছে। এবার থেকে রাজ্যের সিভিক ভলান্টিয়াররাও ব্যাংক থেকে সরাসরি লোন নিতে পারবেন। রাজ্য সরকার এবং পুলিশ বিভাগের বিশেষ উদ্যোগে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করে এই সুবিধা কার্যকর করা হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে সিভিক ভলান্টিয়াররা আর্থিকভাবে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। সেই সমাধান করতেই রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
কেন এই উদ্যোগ প্রয়োজনীয়?
বর্তমানে রাজ্যে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার সিভিক ভলান্টিয়ার কর্মরত রয়েছেন। এরা থানার কাজ থেকে শুরু করে উৎসব এবং অনুষ্ঠানে পুলিশের সঙ্গে মিলেমিশে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে থাকে। তবে তাদের মাসিক বেতন মাত্র ১০ হাজার টাকা হওয়ায় জরুরী প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারত না।
বেশিরভাগ ব্যাংকের যুক্তি ছিল, সিভিক ভলান্টিয়াররা চুক্তিভিত্তিক কর্মী হওয়ায় তারা ঋণের জন্য উপযুক্ত নন। কারণ তারা সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন না। তাই তাদের প্রায়শই বাজার থেকে উচ্চ সুদে টাকা ধার নিতে হতো। এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই নবান্ন ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা এই বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে।
কীভাবে কাজ করবে এই নতুন উদ্যোগ?
সম্প্রতি রাজ্য পুলিশ এবং একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মধ্যে একটি চুক্তি করা হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী-
- সিভিক ভলান্টিয়াররা সর্বোচ্চ ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন।
- লোন পাওয়ার জন্য জমি বা বাড়ির দলিল জমা রাখতে হবে, যার মূল্য ১ লক্ষ টাকার বেশি হতে হবে।
- সিভিক ভলেন্টিয়ারদের স্যালারি একাউন্ট নতুন ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
লোনের জন্য আবেদন প্রক্রিয়া
সিভিক ভলেন্টিয়ারদের এই লোনের জন্য আবেদন করতে হবে সরাসরি ব্যাঙ্কে গিয়ে। এর জন্য আপনাকে নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করতে হবে-
- প্রথমে জমি বা বাড়ির দলিল, আইডি প্রুফ হিসেবে আধার কার্ড এবং সিভিক ভলেন্টিয়ার হিসেবে কাজের পরিচয়পত্রগুলি প্রস্তুত করুন।
- এরপর নতুন স্যালারি একাউন্টের ডকুমেন্টসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন পত্র জমা দিন।
- এরপর ব্যাংক থেকে লোনের আবেদনপত্র গ্রহণ করে সেটি পূরণ করুন।
- ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করে লোন মঞ্জুর করবে।
- সমস্ত প্রক্রিয়া শেষ হলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ৩৯% ডিএ না পেলে রাজ্যে বড় আন্দোলন, বাজেটে বড় পদক্ষেপ নেবে মমতা
সিভিক ভলেন্টিয়ারদের সুবিধা ও ভবিষ্যৎ
এই উদ্যোগ সিভিক ভলেন্টিয়ারদের আর্থিক চাপ অনেকটাই কমাবে তা বলা যায়। জরুরি প্রয়োজনে সিভিক ভলেন্টিয়াররা আর উচ্চ সুদে টাকা ধার নেওয়ার সম্মুখীন হবে না। একই সঙ্গে সরকারের এই পদক্ষেপ সিভিক ভলেন্টিয়ারদের তাদের কাজের প্রতি আগ্রহকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।