বাংলার বিভিন্ন জায়গায় বার্ড ফ্লু (Bird Flu) আতঙ্ক ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছে। কিছুদিন আগে অন্যান্য রাজ্যে বার্ড ফ্লু ছড়ানোর খবর শিরোনামে এসেছিল। তবে এবার পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। কারণ প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের একাধিক জায়গায় এবার এই ভাইরাসের হদিশ মিলেছে। ফলে পশ্চিমবঙ্গেও সংক্রমনের আশঙ্কা চলছে।
ঝাড়খন্ডে বার্ড ফ্লুর হদিশ
ঝাড়খণ্ডের পাকুর জেলার পাকুর গ্রামে প্রথমবার বার্ড ফ্লু ভাইরাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। একাধিক পোল্ট্রি ফার্মে এই ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। যার ফলে পরিস্থিতি আরো গুরুতর হয়ে উঠেছে। বেশ কিছু সূত্র দাবি করছে, পাকুর গ্রাম সংলগ্ন ১০ কিলোমিটার এলাকা এই বার্ড ফ্লু ভাইরাসের এপিসেন্টার হতে পারে। অর্থাৎ, এখান থেকে আরও জায়গায় ছড়ানো সম্ভাবনা রয়েছে।
মুর্শিদাবাদ জেলার প্রশাসনিক পদক্ষেপ
ঝাড়খণ্ডের কাছাকাছি থাকা মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। বিশেষ নজরদারি চালানোর জন্য মুর্শিদাবাদের সুতি ১ নম্বর ব্লক, উমরপুর শামশেরগঞ্জ, পাইকর, ধুলিয়ান, নওপাড়া, এবং ফারাক্কার মহাদেবনগরে বিশেষ প্রতিরক্ষা টিম গঠন করা হয়েছে। প্রশাসন সেখান থেকে নিয়মিত এই ভাইরাস নিয়ে চেকিং করে রিপোর্ট তৈরি করছে।
একই সাথে পোল্ট্রি ফার্মগুলোতে কঠোর বায়ো সিকিউরিটি প্রোটকল পালন করতে বলা হয়েছে, যাতে ভাইরাসের সংক্রমণ না ছড়ায়। ঝাড়খন্ড থেকে মুরগি যেন মুর্শিদাবাদে প্রবেশ করতে না পারে, সেদিকেও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
মুরগির মাংস খাওয়া নিয়ে নির্দেশিকা
বিশেষভাবে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, বর্তমানে মুরগির মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কোন রকম বাধা নেই। প্রশাসন বলছে, “ভাইরাসের সংক্রমণ মুরগির মাংস থেকে ছাড়ায় না। তবে জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে হবে। মুরগির মাংস খাওয়া পুরোপুরি নিরাপদ। তবে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।”
আরও পড়ুন: ১লা এপ্রিল থেকে এইসব মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবে না, আপনি নেই তো?
সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপ
ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার উভয়ই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবে। এমনকি ঝাড়খণ্ড সীমান্তবর্তী এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে, যাতে ভাইরাসের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়ে জনগণকে সচেতন থাকতে এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে।
বার্ড ফ্লু নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও প্রশাসন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার সর্বত্র চেষ্টা করছে এবং মানুষের মধ্যে সঠিক তথ্য প্রদান করছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণ মুরগির মাংসের মাধ্যমে ঘটবে না। তবে স্বাস্থ্য সচেতনতা মেনে সতর্ক থাকতে হবে। আশা করা যায়, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে বাংলায় এই ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকানো যাবে।