রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর (SIR)। আর এ নিয়ে এখন নতুন বিতর্ক গোটা রাজ্যে। রাজ্যের অন্যান্য বিধানসভায় এলাকায় ২০০২ সালের ভোটার তালিকাকে মূল ভিত্তি ধরেই এই এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে নাকি ২০০৩ সালের তালিকাকে মূল ভিত্তি ধরা হচ্ছে। এই ঘটনা প্রকাশে আসতেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
কী ঘটেছে কুলপিতে?
আসলে নির্বাচন কমিশনের নতুন ওয়েবসাইটে কুলপি বিধানসভার জন্য যে ভোটার তালিকা আপলোড করা হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে ২০০৩ সালের ১ জানুয়ারির খসড়া তালিকা। এমনকি কুলপির বরবেরিয়া জুনিয়ার বেসিক স্কুল, মুকুন্দপুর এফপি স্কুল, হাঁড়া জেলেপাড়া এফপি স্কুল সহ মোট ১৮৭টি বুথেই ২০০৩ সালের তালিকা ব্যবহার করা হয়েছে।
আর এই তথ্য প্রকাশে আসতেই তৃণমূলের নেতাদের তরফ থেকে কমিশনের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলছে, একই রাজ্যে একই প্রক্রিয়ায় যদি এসআইআর হয়, তাহলে কোনও জায়গায় ২০০২ সালের তালিকা, আবার কোন জায়গায় ২০০৩ সালের তালিকা কেন?
কমিশন কী বলছে?
তবে কমিশনের তরফ থেকে কয়েক মাস আগে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছিল। তারা দাবি করছে, রাজ্যের কিছু বিধানসভায় এলাকায় ২০০২ সালের সম্পূর্ণ তালিকা এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তাই বিকল্প হিসেবেই ২০০৩ সালের তালিকাকে মূল ভিত্তি ধরা হচ্ছে। কমিশনের বক্তব্য, ২০০২ এবং ২০০৩ সালের তালিকায় সেরকম কোনও পার্থক্য নেই।
ক্ষোভ উগড়ে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
এদিকে তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ঘটনায় সরাসরি কমিশনের দিকেই আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেছেন, কমিশন একদিকে বলছে যে, ২০০২ সালের তালিকা মূল সূচক। তাহলে কুলপিতে কেন ২০০৩ সালের তালিকা ধরা হচ্ছে? এক বিধানসভায় দুই নিয়ম তো মোটেও চলবে না। এটা কমিশনের খামখেয়ালি ছাড়া আর কিছু নয়।
মমতার মিছিলে উত্তাল কলকাতা
এদিকে এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যজুড়ে দিনের পর দিন বাড়ছে বিরোধ। সোমবার হুগলির ডানকুনির পুরো এলাকায় এক বৃদ্ধর মৃত্যু নিয়ে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে চাঞ্চল্য। পরিবার দাবী করছে, এসআইআর আতঙ্কেই তার মৃত্যু। এমনকি এই আন্দোলনে মঙ্গলবার কলকাতায় রাস্তায় নেমেছে তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।
তবে অভিষেক আরও দুটি প্রশ্ন তুলেছেন। প্রথমত, কুলপির ক্ষেত্রে ২০০২ সালের তালিকা না থাকলে কমিশন ঘোষিত নিয়ম তাহলে কীভাবে কার্যকর হবে। আর দ্বিতীয়ত, মুরারইর সোনালি বিবি বা বীরভূমের সুইটি খাতুনের বাংলাদেশের পাঠানো হলো কেন? যখন তাদের পরিবারের নাম ২০০২ এর ভোটার তালিকা স্পষ্ট রয়েছে। দুই প্রশ্ন নিয়েই রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে আগুন ঝড়ছে।
