তীব্র গরমে কার্যতর জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছে বাংলার মানুষ। বিশেষত দক্ষিণবঙ্গে পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বৈশাখ মাসের গোড়াতেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।
সকাল ১০ টা বাজতে না বাজতেই লু বইছে। তাপপ্রবাহের হাত থেকে বাঁচতে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ চলে গেলে মানুষজনের বেঁচে থাকাটাই যে কঠিন হয়ে দাঁড়াবে তা ভালোমতই বুঝতে পেরেছেন রাজনীতি থেকে প্রশাসন সর্বস্তরের মাথারা। যেখানে ফ্যান, এসি, কুলার চালিয়েও ভয়াবহ তপপ্রবাহের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যদি বিদ্যুৎ না থাকে তবে বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এমন বিপদ থেকে রাজ্যবাসীকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে সরকার।
এই তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেই গত সপ্তাহে রাজ্যের বেশ কিছু এলাকা থেকে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর এসেছে। বহু জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ ছিল না। ফলে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এমনিতেই গরমকাল পড়লে বিদ্যুতের চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যায়। এবার অস্বাভাবিক গরম পড়ায় চাহিদা আরও বেড়েছে। সেই সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলায় সভা-সমাবেশের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা অন্যান্য বছরের এই সময়ের থেকে অনেকটাই বেশি।
আরো পড়ুনঃ EPF নিয়ে সরকারের নতুন পরিকল্পনা, এবার আরো বেশি কর্মচারী সুবিধা পাবে
তবে এই পরিস্থিতি যে তৈরি হবে তা বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থাগুলো আগে থেকেই জানত। ফলে তাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখার কথা। কিন্তু তা সত্ত্বেও বেশ কিছু জায়গায় লোডশেডিং হওয়ায় নড়েচড়ে বসে রাজ্য সরকার। রাজ্যের সর্ববৃহৎ বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদক ও সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসি-র সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠক করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
সিইএসসি-র উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বিদ্যুৎ মন্ত্রীর এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বেশ কিছু বড় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। বিদ্যুৎ মন্ত্রী সিইএসসি-কে জানিয়েছেন, কোনোভাবেই লোডশেডিং মেনে নেওয়া হবে না।
এই গরমে যাতে কারিগরি বিভ্রাট কম হয় তার জন্য সিইএসসি-কে পর্যাপ্ত দক্ষ কর্মী রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে আরও লোক বাড়াতে বলেছেন। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহৃত কারিগরি মোবাইল ভ্যানগুলো যাতে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারে সেই নির্দেশও দেন অরূপ বিশ্বাস।
আরো পড়ুনঃ পিএম কিষানের ১৭ তম কিস্তির টাকা ঢুকবে না, যদি এই কাজটি না করা হয়
সরকারের পক্ষ থেকে সিইএসসি-কে বলে দেওয়া হয়েছে, সমস্ত কিছু দেখভাল করার পরও যদি কোথাও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয় তবে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটর নিয়ে গিয়ে সেই এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে হবে।
কোথাও কারিগরি সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে একটি এলাকা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে থাকবে তা রাজ্য সরকার মোটেও মেনে নেবে না। সরকারের এই নির্দেশিকার সঙ্গে সহমত পোষণ করেছে সিইএসসি। তারা জানিয়েছে, এবার আগেভাগেই যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তাই রাজ্যবাসীকে খুব একটা দুর্ভোগ পোহাতে হবে না উল্লেখ্য গত বছর একইভাবে তীব্র গরম পড়তেই সিইএসসি এলাকায় ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছিল রাজ্যের মানুষ।