পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের যুবসমাজকে সহায়তা করার লক্ষ্যে একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, নতুন বছর থেকেই, যোগ্য তরুণরা প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকার আর্থিক সহায়তা পাবেন। এই উদ্যোগটি ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী যুবকদের জন্য, বিশেষ করে অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত ব্যাকগ্রাউন্ডের যুবকদের সাহায্য করার জন্য আনা হয়েছে এই প্রকল্প।
এই প্রকল্পের মূল বৈশিষ্ট্য
মাসিক আর্থিক সহায়তা: যোগ্য যুবকরা প্রতি মাসে সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১,৫০০ টাকা পাবেন।
টার্গেট গোষ্ঠী: এই প্রকল্পটি মূলত ১৮-৪০ বছর বয়সী যুবকদের জন্য, বিশেষ করে সমাজের অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর যুবকদের জন্য।
লক্ষ্মীর ভান্ডার কর্মসূচির সাথে সংযোগ: নতুন প্রকল্পটি লক্ষ্মীর ভান্ডার কর্মসূচির সাথে একীভূত, যা রাজ্যের মহিলাদের আর্থিক সহায়তাও প্রদান করবে।
এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য
এই উদ্যোগের প্রাথমিক লক্ষ্য হল যুবকদের নিয়মিত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা, তাদের জীবিকা উন্নত করতে এবং স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করা। এই প্রকল্পটি তৈরি করা হয়েছে:
দক্ষতা উন্নয়নের প্রচার: তরুণদের নতুন দক্ষতা অর্জনে উৎসাহিত করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা।
উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা: তরুণদের উদ্যোক্তা সুযোগ অন্বেষণে সহায়তা করা।
কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা: যুবকদের জন্য আরও কর্মসংস্থান প্রদানের জন্য কর্মসংস্থান উদ্যোগকে সমর্থন করা।
আবেদনের জন্য যোগ্যতার মানদণ্ড
যুবশ্রী প্রকল্পে প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা ভাতার জন্য যোগ্যতা অর্জনের জন্য, আবেদনকারীদের নিম্নলিখিত শর্তগুলি পূরণ করতে হবে-
আয়ের সীমা: এই প্রকল্পটি অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত যুবকদের লক্ষ্য করে, যাদের আয়ের নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: আবেদনকারীদের প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত মান পূরণ করতে হবে।
কর্মসংস্থান ব্যাঙ্কে নিবন্ধন: রাজ্যের কর্মসংস্থান ব্যাংক পোর্টালে যুবকদের চাকরিপ্রার্থী হিসাবে নিবন্ধিত হতে হবে।
বেকারত্বের অবস্থা: শুধুমাত্র বেকার যুবকরা যোগ্য।
পরিবারের সদস্যের সীমা: প্রতিটি পরিবারের কেবলমাত্র একজন সদস্য আবেদন করতে পারবেন।
আবেদন প্রক্রিয়া
অনলাইন নিবন্ধন: যোগ্য যুবকরা এই প্রকল্পের জন্য অফিশিয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
সচেতনতা প্রচারণা: সরকার সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিবন্ধনে সহায়তা করার জন্য প্রচারণা পরিচালনা করবে।
শুরুর তারিখ: আবেদনপত্র ২০২৫ সালের জানুয়ারী থেকে খোলা থাকবে।
এই প্রকল্পের প্রত্যাশিত প্রভাব
এই উদ্যোগটি রাজ্যের সমাজকল্যাণমূলক প্রচেষ্টাগুলিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে বলে আশা করা হচ্ছে-
অর্থনৈতিক নিরাপত্তা বৃদ্ধি: যুবসমাজকে নিয়মিত আর্থিক সহায়তা প্রদান, বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা।
জীবিকা উন্নত করা: দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা এবং কর্মসংস্থান প্রচারের মাধ্যমে গ্রামীণ ও আধা-নগর এলাকার যুবকদের সহায়তা করা।
রাজ্য উন্নয়নে অবদান: একটি স্বনির্ভর, ক্ষমতায়িত প্রজন্ম তৈরি করা যা রাজ্যের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: লক্ষীর ভান্ডার থেকে হাজার হাজার নাম বাদ! এরা আর টাকা পাবেনা
সংক্ষেপে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুবশ্রী প্রকল্পটি যোগ্যতার মানদণ্ড পূরণকারী বেকার যুবকদের প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা প্রদান করে। এই উদ্যোগটি রাজ্যের যুবসমাজের আর্থিক ক্ষমতায়ন এবং অর্থনৈতিক সুরক্ষার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দক্ষতা উন্নয়নের সাথে আর্থিক সহায়তা একত্রিত করে, সরকার একটি শক্তিশালী এবং আরও স্বনির্ভর কর্মীবাহিনী তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছে, যা যুবসমাজ এবং রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়ন উভয়কেই উপকৃত করবে।