মধ্যবিত্তর পকেটে পড়তে চলেছে বাড়তি চাপ। নতুন বছর আসার আগেই সাধারণ মানুষের জন্য চরম দুঃসংবাদ। কারণ, একের পর একটা টেলিকম সংস্থা এবার মোবাইল রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। অর্থাৎ, নতুন বছরে ফোনে কথা বলতে গেলে বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে গেলে এবার বেশি পরিমাণে টাকা খরচ করতে হবে। চলুন দেখে নেওয়া যাক, কোন কোন রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়ছে আর কত টাকা বাড়তে পারে, সেই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য।
নতুন বছরের শুরুতেই বাড়ছে রিচার্জ প্ল্যানের দাম
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রিলায়েন্স জিও, এয়ারটেল এবং ভোডাফোন আইডিয়া দেশের প্রধান তিন টেলিকম সংস্থা এবার রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়াতে চলেছে। তবে এখনো পর্যন্ত কোনও সংস্থার তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না করা হলেও বাজারে এ নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। জানা যাচ্ছে, ১০ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত দাম বাড়তে পারে রিচার্জ প্ল্যানের। অর্থাৎ, বর্তমানে যে প্ল্যান ২৩৯ টাকা বা ২৯৯ টাকা দিয়ে কিনছেন, তা খুব শীঘ্রই বেড়ে ২৭০ বা ৩৪০ টাকায় পৌঁছতে পারে।
গ্রাহকদের দেওয়া হয়েছে আগে থেকেই সংকেত
সম্প্রতি জিও এবং এয়ারটেল ১ জিবি ডেটা প্ল্যান বন্ধ করে দিয়েছে। তার বদলে আকর্ষণীয় নতুন প্ল্যান নিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমেই স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, ডেটা ট্যারিফ বাড়ানোর প্রস্তুতি চলছে। ওদিকে এয়ারটেল এখনও পর্যন্ত তার বেস প্ল্যান ২৯৯ টাকাতেই রয়েছে। এমনকি জিওও তাই। তবে ভোডাফোন আইডিয়া এখনও ১ জিবি/প্রতিদিন ডেটা প্ল্যান দিচ্ছে, যা বাজারে টিকে থাকার লড়াইয়ের কৌশল মনে করছে অনেকে।
কেন বাড়ছে এই ট্যারিফ?
ট্যারিফ বাড়ার পিছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। সেগুলি হল—
- প্রথমত, ভারতে দ্রুত ৫জি পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। আর এই নেটওয়ার্ক সংযোগ তৈরি করা বা বিস্তার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
- দ্বিতীয়ত, সরকারের কাছ থেকে স্পেক্ট্রাম কিনতে কোটি কোটি টাকা খরচ করতে হচ্ছে টেলিকম সংস্থাগুলিকে।
- তৃতীয়ত, দেশজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখার জন্য অবকাঠামোগত সম্প্রসারণেও দিনের পর দিন খরচ বাড়ছে।
টেলিকম সংস্থাগুলি দাবি করছে যে, তারা বাধ্য হয়ে রিচার্জ প্ল্যানের দাম বাড়াচ্ছে, যাতে পরিষেবা আরও উন্নত রাখা যায় এবং ৫জি পরিষেবায় বিনিয়োগ কিছুটা হলেও পূরণ হয়।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনেই হবে এনুমারেশন ফর্ম ফিলাপ! কীভাবে করবেন দেখে নিন
কতটা বাড়তে পারে দাম?
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সংস্থা জেপি মরগ্যানের দেওয়া একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, জিও তাদের ট্যারিফ মোটামুটি ১৫ শতাংশ বাড়াতে পারে। তবে এয়ারটেল এবং ভোডাফোনও ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়াতে পারে বলে অনুমান। ফলে যারা এই সিমগুলি ব্যবহার করেন, তাদের জন্য পড়তে চলেছে বাড়তি চাপ। নিন্মবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তদের জন্য যে এটি চরম দুঃসংবাদ হতে চলেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
