কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এখন আধুনিক প্রযুক্তি জগতে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তবে এর উত্থান যেমন বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটিয়েছে, তেমনি কাজ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে অনেকের। শুক্রবার সংসদ পেশ করা একটি আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে এমনই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কেন্দ্র সরকার।
AI-এর প্রভাব কোথায় সব থেকে বেশি?
রিপোর্ট অনুযায়ী AI সবথেকে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে স্বাস্থ্য, গবেষণা, শিক্ষা, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থা এবং আর্থিক পরিষেবার মতো কেন্দ্রগুলিতে। এসব ক্ষেত্রে মেধা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মানুষের কাজ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ফলে বিশেষ করে মধ্য বা নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য চাকরি হারানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে?
এই রিপোর্ট অনুযায়ী, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে কর্মরত ব্যক্তিদের উপর AI-এর প্রভাব সবথেকে বেশি পড়তে পারে। কারণ এই শিল্পে কর্মরত একটা বড় অংশ নিন্মশ্রেণীর আয়ের মধ্যে পড়েন। কোম্পানিগুলি খরচ কমাতে স্বাভাবিকভাবে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারের দিকে ঝুকবে, এটা স্বাভাবিক। তাই এতে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটতে পারে। বিশেষত যেসব কাজ সহজেই অটোমেশনের রূপান্তরিত করা সম্ভব সেই কাজগুলো ঝুঁকির মধ্যে থাকবে।
শিল্প এবং প্রযুক্তি বিপ্লবের উদাহরণ
সমীক্ষায় ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যান্ড্রু হ্যালডেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, আগে শিল্প এবং প্রযুক্তি বিপ্লবের সময় ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকট ঘটে। এছাড়া গৃহহীনতা, দীর্ঘমেয়াদি বেকারত্ব এবং আয়ের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়েছিল। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ব্যাপক ব্যবহার আগামী দিনে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আসঙ্খা করা হচ্ছে।
সরকারের করণীয় কী?
রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, সরকার যেন দ্রুত এই সমস্যার সমাধান খুঁজে বার করে। বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়াই সবথেকে বড় কাজ হবে। পাশাপাশি এই পরিবর্তনগুলি যাতে ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হয় তা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কর্মশ্রী দিয়ে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে মজুরি, কর্মসংস্থানের দারুণ উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার
AI: সুবিধা নাকি চ্যালেঞ্জ?
যদিও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতির নতুন পথ খুলে দিচ্ছে, তবে এর প্রভাব সঠিকভাবে সামলানো না গেলে নিম্ন এবং মাঝারি আয়ের মানুষদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা।