করোনা মহামারীর ক্ষত এখনো গোটা বিশ্বে বিরাজমান। এরই মধ্যে নতুন ভাইরাস HMPV (Human Metapneumovirus)-এর সংক্রমণের খবরে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে গোটা দেশে। গুজরাট, মহারাষ্ট্রের পর এবার পশ্চিমবঙ্গে এই ভাইরাসের প্রকোপ ধরা পড়েছে।
ফলে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠছে, এই ভাইরাস কি আবার লকডাউনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে? তবে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে এখনই এত আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই।
কি এই HMPV?
HMPV হল এক ধরনের শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস, যা সাধারণত শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে বেশি প্রভাব ফেলছে। ঠান্ডা, সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হচ্ছে এই HMPV ভাইরাসের ফলে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে সঠিক চিকিৎসা এবং সাবধানতা অবলম্বন করলে এর প্রভাব থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।
দেশে সংক্রমণের অবস্থা
HMPV ভাইরাসের সংক্রমণ প্রথমে গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রে ধরা পড়েছে। এরপর পশ্চিমবঙ্গেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে গেছে। দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রক এই পরিস্থিতির উপর করা নজর রাখছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী সংক্রমিত এলাকাগুলিতে জনসচেতনতা বাড়ানোর কাজ চালাচ্ছে রাজ্য সরকার।
স্কুল বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা
এই ভাইরাসের সংক্রমণ বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। ফলে সরকার প্রয়োজন হলে স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, অথবা অনলাইন ক্লাস চালু করার নির্দেশ দিতে পারে। তবে এখনই কোন সরকারিভাবে নির্দিষ্ট ঘোষণা করা হয়নি।
ফের কি আসছে লকডাউন?
২০২০-২১ সালের করোনা মহামারীতে দীর্ঘ ২ বছরের লকডাউনে ভারতের অর্থনীতি প্রবল সংকটের মুখে পড়েছিল। তবে HMPV সংক্রমণের ক্ষেত্রে এখনো পর্যন্ত লকডাউনের কোনরকম সম্ভাবনা নেই। কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতির জন্যে দেশ আগের থেকে অনেক বেশি প্রস্তুত। করোনা থেকে পাওয়া শিক্ষা এবং বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এই সংক্রমণ মোকাবিলার জন্যে যথেষ্ট কার্যকর।
কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রুখতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন-
- বাইরে থেকে এলে বা খাবার খাওয়ার আগে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে,
- ভিড় জায়গায় গেলে মাস্ক পড়তে হবে,
- সর্দি-কাশির লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে,
- বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিক পাশে ভারতীয় রেলে ৫৮ হাজার শূন্যপদে নিয়োগ, নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল রেল
কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে এই ভাইরাসের উপর। শিশু এবং বয়স্কদের জন্য বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা করার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে। প্রয়োজন হলে সংক্রমণ বেশি এলাকায় স্কুল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হতে পারে। তাই এখন থেকেই সতর্ক থাকুন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। আতঙ্ক নয়, বরং সঠিক সাবধানতাই এই ভাইরাসকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে।