টোটো পরিষেবা ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে রাজ্যের পরিবহন দপ্তর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে। আগামী দুই তিন মাসের মধ্যেই এই নীতি কার্যকর করার লক্ষ্যে কাজ করছে বলে জানিয়েছে পরিবহন দপ্তরের এক শীর্ষ আধিকারিক। টোটো চালকদের জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা এবং টোটোর রেজিস্ট্রেশন চালুর পরিকল্পনাও করা হয়েছে এই নীতির মধ্যে।
কর্মসংস্থানের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম
বর্তমানে রাজ্যের প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের জীবিকা সরাসরি টোটোর সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে মফস্সল ও গ্রামীণ এলাকায় পরিবহন ব্যবস্থায় কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ হয়ে উঠেছে। তবে এই পরিষেবার উপর নানা অভিযোগ জমা পড়েছে পরিবহন দপ্তরের।
টোটো পরিষেবায় নীতি কেন প্রয়োজন?
টোটোর নিয়ন্ত্রণহীন চলাচল, জাতীয় সড়কে তাদের প্রবেশ এবং বেআইনি টোটো তৈরির অভিযোগ রাজ্য সরকারের কাছে উদ্বেগের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবহনমন্ত্রী আসিস চক্রবর্তী সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, একটি সুনির্দিষ্ট নীতির মাধ্যমে চালকদের স্বার্থরক্ষা এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
পরিবহন দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে যে, নীতি কার্যকর করার আগে রাজ্যের সমস্ত পৌরসভা, পুলিশ প্রশাসন এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। এই নীতির আয়তায় টোটোর নির্দিষ্ট রুট, চালকদের প্রশিক্ষণ এবং যাত্রী সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
বেআইনি টোটো তৈরি বন্ধের অভিযোগ
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বেআইনি লেদ কারখানায় টোটো তৈরি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে পরিবহন দপ্তরের তত্ত্বাবধানে বেশ কিছু কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিবহন দপ্তরের মতে টোটো পরিষেবাকে আইনের কাঠামোর মধ্যে আনতে হলে সরকারি পরিকাঠামো তৈরি করতে হবে। ফলে এই নীতিটি কার্যকর হওয়ার পর টোটো তৈরির কারখানা স্থাপন এবং তা পরিচালনার বিষয়ে রাজ্য সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
চালকদের প্রশিক্ষণ এবং সড়ক নিরাপত্তার উপর জোর
পরিবহন দপ্তরের এক আধিকারিক বলেছেন, “রাজ্যের প্রায় সব জায়গায় টোটো সংখ্যা বেড়ে চলেছে। সঠিক সময় তাদের নিয়মের মধ্যে আনা প্রয়োজন। এর ফলে চালক এবং যাত্রী উভয়ের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।”
আরও পড়ুন: আবাস যোজনার টাকা সবার ব্যাঙ্কে ঢুকে গেছে, কিন্তু রাজমিস্ত্রির অভাবে কাজ হচ্ছে না
চালকদের প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে, যাতে তারা সড়ক নিরাপত্তা এবং টোটো পরিষেবার মান বজায় রাখতে পারেন। একই সঙ্গে টোটোর জন্য নির্দিষ্ট রূট ঠিক করে দেওয়া হবে। এর ফলে যানজট এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা অনেকটাই হ্রাস পাবে।
টোটো পরিষেবার জন্য নতুন নীতি চালু হলে রাজ্যের পরিবহন ব্যবস্থায় নিয়ম-শৃঙ্খলা বজায় থাকবে। চালকদের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক হওয়া এবং টোটো রেজিস্ট্রেশন চালুর মাধ্যমে টোটো পরিষেবাকে সুষ্ঠু কাঠামোর মধ্যে আনা সম্ভব হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রী সুরক্ষা এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।