কৃষি এবং শিক্ষার উন্নয়নের নতুন উদ্যোগ নিয়েছে ইন্ডিয়ান পটাশ লিমিটেড (IPL) এবং ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি কাউন্সিল (NPC)। এদের যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া ‘ICRO অমৃত ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম ২০২৪’ ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার সিধু কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। ৩ মাস ব্যাপী এই ইন্টার্নশিপে ছাত্রছাত্রীরা মাঠে নেমে কৃষকদের সমস্যার সমাধানের বিভিন্ন পথ খুঁজে বার করছে।
ইন্টার্নশিপের বৈশিষ্ট্য
ICRO অমৃত ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম ২০২৪-এর মূল উদ্দেশ্য হল কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা, তাদের সমস্যাগুলোর সমাধানের সহায়তা করা এবং কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
এই প্রকল্পে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি সেগুলো google ফর্মের মাধ্যমে ইন্ডিয়ান পটাশ লিমিটেড (IPL)-এর সাইটে আপলোড করতে হচ্ছে। কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে ইন্টার্নরা পেয়ে যাচ্ছেন ৬০০০ টাকা স্টাইপেন্ড।
কৃষকদের সঙ্গে পড়ুয়াদের কর্মশালা
সম্প্রতি পুরুলিয়ার সিধু কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে কৃষকদের নিয়ে একটি বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে প্রায় ৫০ জন কৃষক এবং ৫০ জন ইন্টার্নশিপ ট্রেনিং নেওয়া প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। কর্মশালায় কৃষকদের জন্য সরকারি কৃষি স্কিমগুলোর সুবিধা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের পরামর্শ প্রদান করা হয়।
বিশেষজ্ঞ উদায় শংকর রায় বলেছেন, “এগ্রিকালচার স্কিমের মাধ্যমে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি কৃষকদের জন্য প্রচুর সুযোগ সুবিধা রয়েছে। আমরা ইন্টার্নদের মাধ্যমে কৃষকদের সেই তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি, যা তাদের দৈনন্দিন কৃষিকাজে আরও সাহায্য করবে।
কৃষি তথ্য সংগ্রহ এবং সচেতনতা বৃদ্ধি
সিধু কানহু বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান সুব্রত রাহা জানিয়েছেন, “ছাত্র-ছাত্রীরা জেলার বিভিন্ন ব্লকে গিয়ে কৃষকদের তথ্য সংগ্রহ করছে। সেই সঙ্গে কৃষকদের সরকারি স্কিমের বিষয়ে তথ্য প্রদান করছে। এতে পড়ুয়াদের প্রাকটিকাল দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষকদের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
কৃষকদের প্রতিক্রিয়া
কৃষক মহাবীর মাহাতো জানিয়েছেন, “আমরা অনেক সরকারি সুবিধার কথা জানতাম না। এখানে এসে সেগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানছি। সেই সঙ্গে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের বিষয়ে নতুন ধারণা পাচ্ছি।
আরও পড়ুন: রাজ্যের বেকার প্রার্থীদের জন্যে বিরাট সুখবর, মমতার নির্দেশে বিপুল শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ হচ্ছে
ইন্টার্নশিপে অংশগ্রহণকারী ছাত্রী বলেছেন, “এই প্রোগ্রাম আমাদের জন্য শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা। পুঁথিগত জ্ঞান ছাড়া বাস্তব ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। কৃষকদের সমস্যাগুলি বুঝতে পারছি এবং তাদের পাশে দাঁড়াতে পারছি।
অমৃত ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রামের মাধ্যমে যেমন পড়ুয়াদের হাতে-কলমে কাজের অভিজ্ঞতা তৈরি হচ্ছে, ঠিক তেমনই কৃষকরাও পাচ্ছেন বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক চাষাবাদের ধারণা এবং সরকারি স্কিমের সুবিধা সম্পর্কে সচেতনতা। এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে কৃষিক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনবে এটাই আশা করা যায়।