অনলাইন, বিশেষত মোবাইল কানেকশনকে ব্যবহার করে জালিয়াতির ঘটনায় লাগাম টানতে উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রক। এই বিষয়ে তারা একের পর এক পদক্ষেপ করছে। যে সকল নম্বর থেকে ফোন করে ও এসএমএস পাঠিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করা হয় সেই সমস্ত নম্বরগুলো ব্লক করে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
পাশাপাশি যে সকল মোবাইল হ্যান্ডসেট থেকে এই ধরনের কাজকর্ম করা হয় সেগুলিও এবার বন্ধ করে দেওয়ার প্রক্রিয়ার শুরু করেছে টেলিকম মন্ত্রকের অধীনস্থ DOT. পাশাপাশি তারা চালু করেছে একটি পোর্টাল, যেখানে অনলাইন জালিয়াতির যাবতীয় অভিযোগ নথিভুক্ত করা যাবে। এছাড়াও আরও একগুচ্ছ পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ১৫ এপ্রিল থেকে বন্ধ হয়ে গিয়েছে মোবাইল কলিং-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার। অনলাইন প্রতারণা ঠেকাতে কল ফরওয়ার্ডিং পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে টেলিকম মন্ত্রক। USSD কোডের মাধ্যমে যেমন মোবাইলের ব্যালেন্স, ডেটা ব্যালেন্স ইত্যাদি জানা যায় তেমনই USSD কোড *401# -এর মাধ্যমে আপনার মোবাইল নম্বর থেকে অন্যত্র কল ফরওয়ার্ড করে দেওয়া যায়।
এক সময় অনেকেই এই কাজটি করতেন। আর ঠিক সেই সুযোগ নিয়েই প্রযুক্তিগত বিষয়ে কম সচেতন গ্রাহকদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে জালিয়াতরা। জানা গিয়েছে, গ্রাহকদের ফোন করে কাস্টমার সার্ভিস বলে পরিচয় দিচ্ছে প্রতারকরা। তারপর সিম কার্ডে সমস্যা আছে দাবি করে *401# এই USSD কোডে ডায়াল করতে বলছে।
আরো পড়ুনঃ ব্যাঙ্কে গিয়ে দ্রুত এই ফর্ম ফিলাপ করুন, ৩১ মে পর্যন্ত সময় আছে
যে গ্রাহকরা বিষয়গুলি ভালমত জানেন না তাঁরা সরল মনে বিশ্বাস করে ওই কোড ডায়াল করছেন। আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের নম্বরটি অন্যত্র ফরওয়ার্ড হয়ে যাচ্ছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সিম ক্লোন করে নেওয়া, অ্যাকাউন্ট সাফ করে দেওয়ার মত নানান প্রতারণা করে চলেছে।
এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা ঠেকাতেই কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রক সিদ্ধান্ত নেয় কল ফরওয়ার্ডিং-এর USSD কোডটি আর অ্যাক্টিভ রাখা হবে না। এরই পাশাপাশি মোবাইল সিম ব্যবহার করে এসএমএস ও ফোন কলের মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতারিত করার চেষ্টার অভিযোগে প্রায় ১০ হাজার ফোন নম্বর বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৩৪৮ টি মোবাইল হ্যান্ডসেটকে ব্লক করে দিয়েছে সরকার। ফলে ওই মোবাইলগুলোর সাহায্যে আর কোনওরকম এসএমএস বা ফোন কল করা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ যোগ্যদের চাকরির ক্ষতি যেন নাহয়! ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে এইকাজ করতে বললেন মুখ্যমন্ত্রী
এদিকে অনলাইন প্রতারণার শিকার হলে আজও এ দেশের গ্রাহকদের একটা বড় অংশের ইচ্ছে থাকলেও সঠিকভাবে অভিযোগ জানাতে পারেন না। নানান নিয়মতান্ত্রিক জটিলতার কারণে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হন তাঁরা। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকার চালু করেছে চক্ষু পোর্টাল (Chakshu Portal)। অনলাইন প্রতারণার শিকার হলেই সঙ্গে সঙ্গে এই পোর্টালে অভিযোগ নথিভুক্ত করতে হবে। আর তাহলেই সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়ে উঠবে।