পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা নিয়ে ক্রমশ অসন্তোষ বেড়ে চলেছে। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ না পাওয়াই বহুদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
যেখানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা সপ্তম পে কমিশনের ৫৩% হারে ডিএ পাচ্ছেন, সেখানে রাজ্যের সরকারি কর্মীরা ষষ্ঠ পে কমিশনের আওতায় মাত্র ১৪% ডিএ পায়। এই বিশাল ফারাক নিয়েই ক্ষোভ প্রকাশ করছে রাজ্য সরকারি কর্মীরা।
১২ই ফেব্রুয়ারি বাজেটে সমাধান মিলবে?
আগামী ১২ই ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় রাজ্য সরকার নতুন বাজেট পেশ করতে চলেছে। এটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় পূর্ণাঙ্গ বাজেট হতে চলেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বাজেটে রাজ্য সরকারি কর্মীদের জন্য বড় কিছু ঘোষণা করা হতে পারে। তবে ডিএ সংক্রান্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে এখনো সংশয় রয়ে গেছে।
ডিএ নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের ফারাক
বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ডিএ এবং রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ এর মধ্যে পার্থক্য প্রায় ৩৯ শতাংশ। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ নামে রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি সংগঠন এই দাবিকে সামনে রেখেই আন্দোলন করছে।
কোর কমিটির সদস্য নির্ঝর কুণ্ডু জানিয়েছেন, “রাজ্য সরকার বকেয়া ডিএ মেটাতে বাধ্য। এটি কর্মচারীদের সম্পূর্ণ অধিকার। অপেক্ষার সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। এবার আমাদের বড় আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।” তিনি আরো জানিয়েছেন, “মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছার উপর নির্ভরশীল নয়, বরং এটি সরকার কর্তৃক কর্মচারীদের প্রাপ্য অধিকার।”
বাজেটে ডিএ বৃদ্ধির সম্ভাবনা
গত কয়েক বছর ধরেই বাজেট পেশার সময় রাজ্য সরকার ডিএ বৃদ্ধি করেছে। ২০২৩ সালের বাজেটে ৩ শতাংশ এবং ২০২৪ সালের বাজেটে ৪ শতাংশ ডিএ বাড়ানো হয়েছিল। সব মিলিয়ে বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মীরা ১৪ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছে। এই ডিএ বৃদ্ধির হার এখনো কেন্দ্রীয় হারের তুলনায় অনেকটাই পিছিয়ে।
আরও পড়ুন: আধার কার্ড নিয়ে কেন্দ্রের নতুন আপডেট, আধার কার্ড থাকলে এই নিয়মগুলি মানতেই হবে
আন্দোলনের প্রস্তুতি
রাজ্যের ডিএ বঞ্চিত কর্মচারীরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে, এবারের বাজেটে যদি ৩৯ শতাংশ বকেয়া ডিএ মেটানোর কোন ঘোষণা না আসে, তাহলে তারা বড় আন্দোলনে নামবে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ ইতিমধ্যেই আন্দোলন করতে প্রস্তুত হয়ে গেছে।
অতীতের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষোভ দূর করতে বাজেটে ডিএ সংক্রান্ত কিছু ঘোষণা করতে পারেন। তবে তা কেন্দ্রীয় হারে ৩৯ শতাংশ বকেয়া ডিএ পূরণ করবে কিনা তা নিয়ে এখনো সংশয় রয়েছে।