পশ্চিমবঙ্গ সহ মোট ১২টি রাজ্যে শুরু হয়েছে এসআইআর (SIR) বা ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন। ৪ নভেম্বর থেকেই বাড়ি বাড়ি বিএলও-রা এনুমারেশন ফর্ম বিলি করছেন। তবে এ নিয়ে রাজ্যজুড়ে চলছে জোর জল্পনা। বিশেষ করে সেই সমস্ত ভোটারদের মধ্যে, যাদের পরিবারের কারও নাম ২০০২ সালের তালিকায় নেই। কিন্তু তাদের কী করতে হবে?
কী এই এসআইআর বা বিশেষ নিবিড় সংশোধন?
জানিয়ে রাখি, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের প্রতিটি ভোটারের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকা সঙ্গে এবার পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। আর এর মূল উদ্দেশ্য হল ভোটার তালিকা থেকে ভুয়ো এবং অবৈধ ভোটারদের নামগুলো বাদ দেওয়া এবং প্রকৃতদের তথ্য হালনাগাদ করা।
বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসাররা ৪ নভেম্বর থেকেই বাড়ি গিয়ে এই এনুমারেশন ফর্ম বিলি করছেন। প্রতিটি ভোটারকেই তারা এই ফর্ম দিচ্ছেন। ভোটারদের কাজ হবে শুধুমাত্র ২০০২ সালের তালিকার সঙ্গে নিজের বর্তমান নাম মিলিয়ে ফর্ম পূরণ করা। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, প্রতিটি বাড়িতে তিনবার করে তারা ভিজিট করবেন, যাতে কেউ বাদ না পরে।
২০০২ সালের তালিকায় নাম না থাকলে কী হবে?
যদি কোনও ভোটারের নিজের নাম ২০০২ সালের তালিকায় না থাকে, তাহলে কোনও চিন্তা করার কারণ নেই। সেই ভোটার তালিকায় পরিবারের বাবা, মা, ঠাকুরদা বা ঠাকুমার নাম দেখাতে পারলেই ঝামেলা শেষ। অর্থাৎ, পরিবারের কারো নাম থাকলে তার নাম আর ভোটার লিস্ট থেকে বাদ যাবে না।
কিন্তু হ্যাঁ, যদি পরিবারের কোনও সদস্যের নাম ২০০২ সালে তালিকায় না থাকে, তাহলে কমিশন মোট ১৩টি ডকুমেন্ট নির্ধারণ করেছে। সেই ডকুমেন্টগুলির মধ্যে যে কোনও একটি দেখাতে পারলেই আর কোনও চিন্তার কারণ থাকবে না।
কী কী ডকুমেন্ট দেখাতে হবে?
কমিশনের তরফ থেকে যে ১৩টি ডকুমেন্টের তালিকা দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল—
- ১৯৮৭ সালের ১ জুলাই কিংবা তার আগের সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ব্যাংক কিংবা পোস্ট অফিস বা এলআইসি দ্বারা দেওয়া কোনওরকম প্রমাণপত্র।
- স্থায়ী বসবাসের প্রমাণপত্র, রাজ্য সরকারের দেওয়া হতে হবে।
- নিজের জন্ম বা বার্থ সার্টিফিকেট।
- যে কোনও স্বীকৃত পর্ষদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়া মাধ্যমিকের মার্কশিট এবং উচ্চ মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট।
- নিজের পাসপোর্ট।
- ফরেস্ট রিজার্ভ সার্টিফিকেট।
- জাতীয় নাগরিকত্বের নথি বা এনআরসি।
- উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দেওয়া তপশিলি জাতি বা উপজাতি কিংবা অনগ্রসর সম্প্রদায়ের সার্টিফিকেট।
- সরকারের তরফ থেকে দেওয়া যে কোনও জমি বা বাড়ি বরাদ্দের শংসাপত্র বা দলিল।
- রাজ্য সরকার কিংবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দেওয়া ফ্যামিলি রেজিস্টার তথ্য।
- কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা রাজ্য সরকার বা রাষ্ট্রায়াত্ত্ব কোনও সংস্থার দেওয়া পরিচয়পত্র।
- অবসরপ্রার্থীরা পেনশন অর্ডারও দেখাতে পারবে।
আরও পড়ুনঃ রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি বন্ধ হয়ে যাবে! এই কাজটি না করলেই
তবে এক্ষেত্রে বলে রাখি, আপনি আধার কার্ড দিয়েও পরিচয়ের প্রমাণ দিতে পারবেন। কিন্তু আধার কার্ড দিয়ে মোটেও নাগরিকত্ব দাবি করা যাবে না। আধার কার্ড দেখালেও আপনাকে উপরের ১৩টি ডকুমেন্টের মধ্যে যে কোনও একটিকে দেখাতেই হবে। তাহলেই আপনার নাগরিকত্ব যাচাই হবে।
