বাংলায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের টাকার অনিয়ম নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সরকারি ঘর পাওয়ার এই প্রকল্পে টাকা বন্টনের দুর্নীতির অভিযোগে বারবার সরব হয়েছে বিরোধী দল বিজেপি।
এতদিন এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও এবার কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকার নিজেই মেনে নিল যে প্রকৃত প্রাপকদের একাউন্টে টাকা না গিয়ে অন্যদের একাউন্টে সরাসরি সেই টাকা পৌঁছে যাচ্ছে। এই ঘটনাটি নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা রাজ্যে।
কিভাবে ঘটল এই অনিয়ম?
এই ঘটনাটির সূত্রপাত দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং 1 নম্বর ব্লকের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতে। স্থানীয় ৫ জন বাসিন্দা যারা আবাস যোজনার ঘর পাওয়ার যোগ্য ছিলেন, তাদের টাকাগুলি ভুলবসত অন্যদের একাউন্টে সরাসরি পৌঁছে যায়। দীর্ঘদিন অপেক্ষার পরেও তারা টাকা পায় না।
তাই তারা পঞ্চায়েতে অভিযোগ জানান। প্রথমে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে জানানো হয় তাদের টাকা আসেনি এবং তারা এই অর্থের যোগ্য দাবিদার নয়। তারপর তারা আদালতের দ্বারস্থ হন।
কোর্টে তদন্ত এবং রিপোর্ট
২০২৩ সালে এই মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ওঠে। বিচারপতি রবি কিষাণ কাপুরের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই তদন্তের রিপোর্ট করেন। রিপোর্টে প্রকাশিত হয় যে ৫ জন আবেদনকারীর মধ্যে দুজনের প্রথম কিস্তির টাকা এবং বাকি তিনজনের তিনটি কিস্তির টাকা অন্য একাউন্টে সরাসরি জমা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রেশন কার্ডে বড় পরিবর্তন! এবার থেকে চাল কম পাবেন, গম বেশি পাবেন, জানুন বিস্তারিত
হাইকোর্টের পদক্ষেপ
এই অনিয়মের প্রতিবাদে বিচারপতি কাপুর ঘটনাটিকে ইচ্ছাকৃত জালিয়াতি হিসেবে অভিহিত করেন এবং অবিলম্বে ফৌজদারী আইনের আওতায় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত, বিডিও এবং প্রধানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিস্তারিত তথ্য তলব করা হয় হাইকোর্টের তরফ থেকে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপি ফের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে। প্রকৃত উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা না হয়ে অন্যদের একাউন্টে টাকা চলে যাওয়াই এই ঘটনায় রাজ্য শাসকদলের অবস্থান আরো বিব্রতকর তৈরি হয়েছে।