রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের জন্য দুর্দান্ত সুখবর। সিভিক ভলান্টিয়ারদের কর্মদক্ষতা এবং কর্মক্ষেত্রে আরো দক্ষ করে তুলতে এবার উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। এবার তাদের দেওয়া হবে বিশেষ প্রশিক্ষণ। সম্প্রতি ভবানী ভবনের পক্ষ থেকে নবান্নে পাঠানো একটি প্রস্তাবে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ৩ মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি নবান্ন।
প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা
ভবানী ভবনের প্রস্তাব অনুযায়ী জেলা স্তরে পুলিশ সুপার এবং কমিশনারেট এলাকাগুলিতে নগরপালের অধীনে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে আইন ও নিয়ম শৃঙ্খলা বিষয়ে তথ্য, মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার শেখানো এবং জরুরীকালীন পরিস্থিতিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার পদ্ধতি। পাশাপাশি শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
আর জি কর মামলার প্রভাব
আর জি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ঘটনার পর থেকে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কার্যপদ্ধতি নিয়ে নিয়মিত প্রশ্ন উঠেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ছিলেন এক সিভিক ভলেন্টিয়ার, যার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ ওঠে। সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র ভৎসর্না করে জানতে চেয়েছিল সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়োগ প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হয় এবং তারা ঠিক কতজন এই পদে কর্মরত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ
আর জি কর মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যকে নির্দেশ জারি করেছিল যে, হাসপাতাল বা স্কুলের মত সংবেদনশীল জায়গায় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের আর নিয়োগ করা যাবে না। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার সিভিকদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে এবং তাদের সঠিকভাবে কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে এই প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রশিক্ষণের সময়সীমা ও কার্যক্রম
নির্দেশ অনুযায়ী যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকেই এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং মৌলিক আইনের জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি তাদের আচরণের শৃঙ্খলা আনার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১ বছরে ১০,০০০ টাকা দেবে সরকার, এই কাগজগুলি জমা করতে হবে
প্রাথমিক পদক্ষেপ
ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের এলাকায় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে রাজ্যস্তরে এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে।
প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের মানুষের সঙ্গে আরও দায়িত্বশীল এবং পেশাদার করে তোলাই রাজ্য সরকারের মূল উদ্দেশ্য। প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার সিভিক ভলেন্টিয়ার এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়তায় আসবেন। এই পদক্ষেপ শুধু সিভিক ভলান্টিয়ারদের দক্ষতা বাড়াবে না, বরং জনসাধারণের কাছে পুলিশের প্রতি আস্থা আর বাড়াবে।