অবশেষে বহু প্রতীক্ষার পর আবাস যোজনা প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা উপভোক্তাদের ব্যাংক একাউন্টে জমা পড়তে শুরু করেছে। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই টাকা পাঠানো হয়েছে। গ্রামে গ্রামে পাকা বাড়ি তৈরির জন্য হিড়িক পড়ে গেলেও রাজমিস্ত্রি ও জোগাড়ের অভাবে সময়মতো কাজ শেষ করা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেয়ে বাড়ি তৈরীর প্রস্তুতি শুরু
ঘাটাল মহকুমার পাঁচটি ব্লকের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাস যোজনা প্রকল্পের তালিকাভুক্ত উপভোক্তাদের একাউন্টে পর্যায়ক্রমে প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকতে শুরু করেছে। চলতি মাসের মধ্যেই সমস্ত উপভোক্তা এই অর্থ পেয়ে যাবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
প্রথম পর্যায়ে পাওয়া অর্থ খরচ করে তারা তথ্য জমা দেওয়ার পরেই মিলবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা। তবে বাড়ি তৈরির কাজ শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় শ্রমিক বা রাজমিস্ত্রি না পাওয়াই অনেকেই চিন্তায় পড়েছে।
রাজমিস্ত্রির অভাবে উপভোক্তাদের চিন্তা বাড়ছে
টাকা পেয়ে উপভোক্তারা বাড়ি তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে দিলেও রাজমিস্ত্রির অভাবে তাদের কাজ ব্যহত হচ্ছে। রাধানগর গ্রামের লক্ষণ মান্ডি বলেন, “ব্যাংকে টাকা জমা পড়েছে। মেসেজ পেয়েছি। ৬০ হাজার টাকা হাতে এসেছে। কিন্তু রাজমিস্ত্রি পাচ্ছিনা, চারদিকে খুঁজেও সমাধান হচ্ছে না।”
রাজমিস্ত্রিদেরও কাজের চাপ বাড়ছে। ঘাটালের রাজমিস্ত্রি রবি দাস বলেন, “এখন ঘনঘন ফোন আসছে। সবাই জানতে চাইছে কবে সময় আছে। সারা বছর এমন কাজ থাকলে আমাদের জীবনটাই বদলে যেত।”
পঞ্চায়েতের ভূমিকায় চাপ
প্রথম কিস্তির টাকা হাতে পেয়ে উপভোক্তারা যখন কাজ শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে, তখন রাজমিস্ত্রি ও জোগাড়ের সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েত ধরনা দিয়েছেন অনেক উপভোক্তা। চন্দ্রকোনা ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অলোক ঘোষ বলেন,” টাকা ঢুকতেই মিস্ত্রির জন্য অনেকেই পঞ্চায়েতে আসছেন। তাদের সমস্যার সমাধান করা এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের উদ্যোগ
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন সমস্যা সমাধানে সক্রিয় হয়েছে। বিভিন্ন ব্লকে কর্মশালা ও বৈঠকের মাধ্যমে রাজমিস্ত্রি এবং জোগাড়ের সহযোগিতা দেওয়ার পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। ঘাটালের বিডিও অভীক বিশ্বাস বলেছেন, “তিন মাসের মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। মিস্ত্রির সমস্যা সমাধানের জন্য দ্রুত বৈঠক করা হবে।”
আরও পড়ুন: এবার থেকে রেশনের সাথে মিলবে নগদ ১০০০ টাকা, কাদের জন্য এই সুবিধা দেখুন
আবাস যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে উপভোক্তারা যেমন খুশি, তেমনই কাজ শুরুর আগে রাজমিস্ত্রির অভাব তাদের চিন্তা আরও বাড়িয়ে তুলছে। প্রশাসনের সক্রিয়তা এবং পরিকল্পিত পদক্ষেপের মাধ্যমে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে বলেই আশা করা যাচ্ছে।