সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন চোখ রাখলেই একটা জিনিস- গিবলি স্টাইল (Gibli Style)। আর এই স্টাইল ফিল্টারে বদলে দিচ্ছে সাদামাটা প্রোফাইল ছবি। কেউ নিজের, আবার কেউ তার পছন্দের সেলিব্রেটিদের ছবি দিয়ে এখন ট্রেন্ডে উঠে আসছে। হ্যাঁ, এটা GPT-4o বা ChatGPT-র নয়া ফিচার। কিন্তু এই নিরীহ বা মজাদার চেহারার আড়ালে রয়েছে ভয়ানক প্রতারণা।
একদিকে মানুষ মজে গিয়েছে গিবলি স্টাইলে, অন্য দিকে ChatGPT-র মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে ভুয়া আধার কার্ড। আর এতটাই নিখুত ভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে, আলাদা করাও কঠিন।
ফিল্টার নয়, বরং ভয়ংকর রূপান্তর
ChatGPT-র এই নতুন আপডেট GPT-4o আনতে না আনতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় রাতারাতি শোরগোল পড়ে যায়। আর সবাই গিবলি ফিল্টারের ঝড় বইয়ে দেয়। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সাধারণ ছবি ওয়ে উঠছে অ্যানাইমের মত।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। অনেকে এই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে মজার ছবি তৈরি করছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ChatGPT-র এই ইমেজ ফিচারের সাহায্যে জাল আধার কার্ড তৈরি করা হচ্ছে। হ্যাঁ একদম ঠিকই শুনেছেন।
এলন মাস্ক ও স্যাম অল্টম্যানের ভুয়ো আধার তৈরি
সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে এমন কিছু ছবি, যেখানে দেখা যাচ্ছে টেসলার সিইও এলন মাস্ক এবং ওপেন এআই এর সিইও স্যাম অল্টম্যানের নাম এবং ছবি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভুয়ো আধার কার্ড। আর এই ঘটনা মজার মত মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে গভীর প্রতারণা।
AI-এর ক্ষমতা ও জাতীয় নিরাপত্তা
আধার কার্ড বর্তমানে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি ডকুমেন্ট। এতে ব্যক্তিগত তথ্য থেকে শুরু করে বায়োমেট্রিক ডেটা এবং সরকারি পরিষেবার সমস্ত অ্যাক্সেস থাকে। আর এই কার্ড যদি নকল করা হয়, তাহলে মানুষ বিপদে পড়তেই পারে। AI দিয়ে তৈরি জাল কার্ডগুলি এতটাই নিখুঁতভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে, সেগুলো ধরা খুবই কঠিন।
কীভাবে বুঝবেন আসল আধার আর নকল আধারের পার্থক্য?
UIDAI-এর পক্ষ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস দেওয়া হয়েছে। যেগুলি দিয়ে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে, আপনার আধার কার্ডটি আসল নাকি নকল। সেগুলি হল-
১) আসল আধার কার্ড স্ক্যান করলে সব সময় UIDAI এর ওয়েবসাইটে চলে যাবে। যেখানে বিস্তারিত সমস্ত তথ্য দেখা থাকে। নকল কার্ড স্ক্যান করলে কিছুই দেখা যায় না।
২) AI দিয়ে তৈরি কার্ডে ফন্ট অনেক সময় ভিন্ন হয়ে যায়। জাতীয় প্রতীক বা UIDAI এর লোগো অনেকটা বিকৃত দেখা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: কোটি কোটি গ্রাহককে চিন্তায় ফেলে দিল SBI, রাতারাতি বন্ধ জনপ্রিয় স্কিম
৩) AI দ্বারা নির্মিত কার্ডে কোলন, কমা, বাাক্য বিন্যাসে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যায়। আর এই ছোটখাটো পার্থক্যের মাধ্যমেইন সহজেই বোঝা যায়।
৪) গিবলি ফিল্টার বা AI দিয়ে তৈরি ছবি অতিরিক্ত আর্টিস্টিক। এগুলি খেয়াল করলেই চিহ্নিত করা যাবে।
তাই ChatGPT বা অন্য AI টুলের ক্ষমতা সত্যিই অভাবনীয়। তবে সেই ক্ষমতা যদি ভুল পথে যায়, তাহলে মজার জিনিস হয়ে উঠতে পারে প্রতারণার যন্ত্র। তাই এখনই প্রয়োজনীয় সচেতনতা অবলম্বন করা এবং ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।